Menu
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমীর পূণ্যস্নান পালিত হয়েছে। পূণ্য স্নানে অংশ নিতে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর থেকেই ব্রহ্মপুত্রে পাড়ে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে।
প্রতিবছর চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপমোচনের আশায় স্নান করে ভগবানের আশীর্বাদ কামনা করেন।
স্নান মেলা আয়োজক কমিটির আহবায়ক শ্রী বিষু চন্দ্র জানান, অষ্টমী স্নানের লগ্ন শুক্রবার দিবাগত রাত ২ টা ৭ মিনিট থেকে শনিবার রাত্রি ১২ টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত। তবে এবার শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ১২ টা ৮ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৪১ মিনিট স্নানের উত্তম সময়। ভোর ৪টা থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে বিকাল ৫টায়।
চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোছনের জন্য প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদে পূণ্য স্নান সম্পন্ন করেন।
দিনাজপুরের অজয় চক্রবর্তী জানান, বিগত ১৯৬৯ সাল থেকে এখানে পাপ মোচনের জন্য আসছি। যুদ্ধের সময়টা বাদে পরবর্তীতে প্রতিটি বছর এখানে স্নান করে যাই। নীলফামারী থেকে আসা প্রাণ কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, পরশুরামের মাতৃহত্যার পাপ মোচনের জন্য ব্রহ্মপূত্র নদে এসে স্নান করেছেন। ধর্মীয় ওই রীতি মানার জন্য আমরা প্রতিবছর ব্রহ্মপূত্র নদে প্রাত:স্নান করি।
এদিকে বিশাল এ জনতাকে সামলাতে চিলমারী উপজেলা প্রশাসন থেকে নেয়া হয়েছে সব ধরণের ব্যবস্থা। এবারের স্নান চলে সারাদিনব্যাপী। পূণ্যার্থীদের আগমন উপলক্ষে নদীর তীরে বসেছে মেলা। স্নানের পর নারী-পুরুষের জন্য নেয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
স্নান উৎসবে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পূর্ণ্যাথীরা একদিন আগেই চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। আগতদের থাকার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পূণ্যার্থীদের স্নান পরবর্তী পোশাক পরিবর্তনের জন্য ৩০টি বুথ, ১০টি টিউবওয়েল, পয়ঃনিস্কাশনের জন্য ২৩টি টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে।
এবারের পূণ্য স্নানে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন বলে দাবী আয়োজকদের। তারা জানান, চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী নৌ-বন্দর এলাকা থেকে জোড়গাছ ঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অষ্টমীর স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
চিলমারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুশাহেদ খান জানান, অষ্টমীর স্নান মেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্নান ঘাট, চিলমারীর প্রবেশদারসহ বিভিন্ন রাস্তায় নিরাপত্তার জন্য ১৮১জন পুলিশ, ২৫জন আনসার, ২ ম্যাজিস্ট্রেট, ১জন ডুবুরী, ডিবি, সেনাবাহিনীসহ সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, বহু বছর ধরে চিলমারীর অষ্টমীর স্নান মেলার ঐতিহ্য রয়েছে। সেই সাথে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য এটি তীর্থ স্থান। এখানে স্নানের মধ্য দিয়ে তারা পাপ মোচন হয়ে থাকেন। মেলায় কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়াই খুব ভালো ভাবে উদযাপিত হয়েছে। এবারের মেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ পূর্ণার্থীর উপস্থিতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
আইএ
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সোনালীনিউজ.কম
Powered By: Sonali IT