ঢাকা : মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামালপুরের শামসুল হকের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) আসামির দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। শামসুলের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এহসান এ সিদ্দিক। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. রায়হান উদ্দিন।
শামসুল হকের আপিলের বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য গত ৭ নভেম্বর দিন ধার্য ছিল। তবে সেদিন তারিখ পিছিয়ে ১৪ নভেম্বর নতুন তারিখ রেখেছিল আপিল বিভাগ।
২০১৫ সালের ২৬ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে শামসুল হকসহ জামালপুরের আটজনের বিচার শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুটপাট ও মরদেহ গুমের পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আশরাফ হোসাইন, আবদুল মান্নান ও আবদুল বারী। আমৃত্যু কারাদণ্ড হয় ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক শরীফ আহম্মেদ ওরফে শরীফ হোসেন, হারুন, আবুল হাশেম, মো. শামসুল হক ওরফে বদর ভাই ও এস এম ইউসুফ আলীর।
দণ্ডিতদের মধ্যে শামসুল ও ইউসুফ কারাগারে ছিলেন। অপর ছয়জনকে পলাতক দেখিয়ে এই মামলার বিচার শেষ হয়। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন শামসুল ও ইউসুফ। আপিল বিচারাধীন অবস্থায় ইউসুফের মৃত্যু হয়।
গত ১২ জুলাই শামসুল হকের আপিলের শুনানি শুরু হয়। এরপর ১৮ অক্টোবর চূড়ান্ত শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ রায়ের জন্য দিন ঠিক করে।
এর আগে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল রেখে পুনর্বিবেচনার রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। কিছুদিন আগে তিনিও মারা যান।
এমটিআই