• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বিদায়ী ভাষণে বিচারপতি আবদুল হাফিজ

বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী কীভাবে শত কোটি টাকার মালিক হন


নিজস্ব প্রতিনিধি মে ৩০, ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম
বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী কীভাবে শত কোটি টাকার মালিক হন

ঢাকা: একজন বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী কীভাবে কোটি কোটি এমনকি শত কোটি টাকার মালিক হন, তা দেশবাসীকে হতবাক করে বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগের বিদায়ী বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ।

বিচারিক জীবনের শেষ কর্ম দিবসে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়া বিদায়ী সংবর্ধনায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেন।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে বিদায়ী বক্তব্যে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ বলেন, ‘...দুর্নীতি আমাদের সব অর্জনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দুর্নীতির ব্যাপকতা অনেক। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের হাত থেকে অফিস আদালতকে মুক্ত রাখতে হবে। একজন বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী কীভাবে কোটি কোটি এমনকি শত কোটি টাকার মালিক হন, তা দেশবাসীকে হতবাক করে। তাই এগুলোকে রোধ করতে রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তাহলে দেশ উপকৃত হবে। মানুষ অযাচিত বিপদ থেকে রক্ষা পাবে।’

দেশে অপরাধের ধরন পাল্টে যাওয়া এবং কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ বলেন, ‘সময়ের বিবর্তনে অপরাধের ধরন প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের সন্তানদের ভয়াবহ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অভিভাবকদের বিভিন্নমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। পারিবারিক সম্প্রীতি, সংস্কৃতি, দীর্ঘদিনের লালিত মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে। কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান ঘটেছে। মাদক, সামাজিক অনাচারসহ অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, হুমকি ও আশঙ্কার বিস্তার ঘটেছে। আর এগুলোই আমাদের টেকসই উন্নয়ন, শান্তি, প্রসারিত ভালোবাসা, ধৈর্য্য ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

মিথ্যা মামলার ভয়াবহতা উল্লেখ করে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ বলেন, ‘প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিচার বিভাগকে এর ভার বহন করতে হচ্ছে। এতে আদালতের প্রচুর সময় নষ্ট হচ্ছে। মিথ্যা মামলা ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে।’

বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮২ সালে জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। পরবর্তী ১৯৮৫ সালের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পরে ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ পান।

গত ২৫ এপ্রিল বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ দেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। আগামীকাল শুক্রবার তার ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হবে। তবে এদিন ছুটি থাকায় বৃহস্পতিবার তার শেষ কর্মদিবস।

আইএ

Wordbridge School
Link copied!