ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সময় রাজধানীর মোহাম্মাদপুর থানার দারুন নাজাত ইসলামিয়া মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জোবাইদ হোসেন ইমন হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হলো।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলাটি করেন ইমনের মামা আব্দুল্লা আবু সাইদ ভূঁইয়া। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. এ আরাফাত, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন-অর-রশীদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ড. খ মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত ডিআইজি ও ডিবির সাবেক প্রধান হারুন-অর-রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
এ ছাড়া র্যাবের হেলিকপ্টার টহল টিমের অজ্ঞাতনামা সদস্য ও তাদের কমান্ডিং অফিসারদের অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্রসমাজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করলে ইমন গণআন্দোলনের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোদ দেয়। ছাত্রজনতার আন্দোলনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই গণভবনে প্রেস কনফারেন্সে আন্দোলনকারী ছাত্রদের রাজাকারের বাচ্চা বলে অভিহিত করেন। এতে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করে।
এ অবস্থায় ওবায়দুল কাদের ১৫ জুলাই ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের মোকাবিলা করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট’ মর্মে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে ছাত্রলীগকে গণহত্যার নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনদের পরিকল্পনায় ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আন্দোলনকারীদের নিষ্ঠুরভাবে দমনের জন্য নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের দেখামাত্র গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। তাদের এ নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর জন্য নিজ নিজ বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দেন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, হাবিবুর রহমান। তাদের নির্দেশে বাস্তবায়ন করেন অধস্তন কর্মকর্তারা।
১৯ জুলাই র্যাব সদস্যরা মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মসজিদে হেলিকপ্টারে গুলি ছোড়ে। এর একটি গুলি ইমনের বাঁ কানের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে ডান কানের নিচ দিয়ে চোয়াল ভেদ করে বেরিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইমন মারা যায়।
এমএস