খুলনা: খুলনার খালিশপুর হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুর রহমান নিয়াজ (২৫) হত্যা মামলায় ২১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-৩ এর বিচারক আঃ ছালাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের সরকারি আইনজীবী রোমানা তানহা।
আদালতের তথ্যে অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাত ৯ টার দিকে এলাকার মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্ক সংলগ্ন ক্রিয়েটিভ কার্টস এ্যন্ড কফি হাউজের মধ্যে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে তৈয়্যেবা কলোনীর বাসিন্দা ও মিল শ্রমিক মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে কলেজছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজকে। এ সময় তাকে বাঁচানোর জন্য তার দুই বন্ধু যোবায়ের ও রানা এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। হত্যাকান্ডের পর ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরের দিন নিহতের পিতা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, সৈকত, মোঃ মেহেদী হাসান রাব্বি, অন্তু, মো: সাজ্জাত হোসেন, ইমদাদুল ইসলাম হৃদয়, মো: আরিফ ওরফে চোরা আরিফ, মো: মুন্না, রফিকুল হাসান শাওন ওরফে আতাং বাবু, মো: সাইফুল, মো: মোস্তাক আহমেদ, মিঠাই হৃদয়, মো: ফাহিম ওরফে কালা ফাহিম, রুবেল, মো: মিজানুর রহমান, সবুজ, মো: ফয়েজুর রহমান আরাফাত, মো: তুষার, তুষার আশিকুর রহমান মোল্লা, রাব্বি ওরফে নাটা রাব্বি, নাইম বাবু ওরফে পয়েন্ট বাবু, রায়হান, ইয়াছির রাব্বি ওরফে জুয়েল ওরফে নাটা জুয়েল, সালমান, সাকিব শেখ, নাঈমুর রহমান ফাহিম, রুনু হওলাদার।
চলতি বছরের ৭ মার্চ থেকে নগরীর খালিশপুরে আলোচিত কলেজ ছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজ হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে নির্ধারিত সময়ে বিচার শেষ না হওয়ায় আদালত মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলী করেন।
জীবনের নিরাপত্তার অভাবে মামলার বাদী ও নিহতের পিতা হাবিবুর রহমান শিকদার একাধিকবার বিভিন্ন থানায় জিডি করেন। গত চার বছর ধরে তিনি বরিশাল থেকে খুলনায় মামলার তারিখের দিন এসে চলে যেতেন। এর আগে আসামি অন্তু আর আরাফাত স্বেচ্ছাসেবকলীগের মহানগর কমিটিতে স্থান পাওয়ার পর তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। তাদের ভয়ে বাদী এলাকা ছাড়া হন।
২০২০ সালের ২০ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর ওই একই আদালতে চার্জশীটের ওপর শুনানি শেষে আদালত তা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন।
এসএস