ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় বিচারিক প্রক্রিয়া চলাকালীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্নাকান্নাকাটি করেছেন গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২ বাজার কিছুক্ষণ আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারকার্য চলাকালীন চিফ প্রসিকিউটরের ভুলবশত গুলশানের সাবেক ওসিকে সাভারের ওসি বলে সম্বোধন করে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো আদালতে সামনে তুলে ধরার সময় তিনি দাঁড়িয়ে বিচারকের উদ্দেশ্য করে কান্নাকাটি করে বলেন, আমি কখনই সাভারের ওসি ছিলাম না, আমি গুলশানের ওসি।
কান্নাকাটি করা অবস্থায় গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক বলেন, আমি আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আমার ছেলেও আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। আমি কখনই সাভারের ওসি ছিলাম না। আমি গুলশানের ওসি।
এসময় চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার বলেন, আপনি নির্দোষ হলে আপনার কিছু হবে না।
এসময় দায়িত্বে থাকা পুলিশের এক সদস্য ও সরকার পক্ষের আইনজীবীরা তাকে কথা বলেতে নিষেধ করেন এবং বলেন আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি কথা বলতে পারবেন না। এসময় চিফ প্রসিকিউটর আদালতকে বলেন, লিখিত কাগজটি পড়ার সময় আমি ভুল বসত তাকে সাভারের ওসি বলি। তিনি গুলশানের ওসি। এরপর গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক এর বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ গুলো তিনি আদালতের সামনে পাঠ করেন।
গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গুলো সম্পর্কে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় অভিযুক্ত গুলশানের ওসি মাজারুল হক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে মিলে ছাত্র জনতার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। তার নির্দেশে ১৯ জুলাই পুলিশ বাদুর হোসেন নামের একজনের উপর গুলি চালায়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। একই দিন শাহাজাদপুরে আরো কয়েক জন ছাত্র জনতার উপর ওসি মাজহারের নির্দেশে গুলি চালানো হয়।
পুলিশের সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন এবং এনটিএমসি'র সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসানসহ মোট ৮ জন সাবেক কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে আগামী ১৯ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়াসহ আসামিদের আদালতে হাজির করার নির্দেশও দেয়া হয়।
এ আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
যাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয় তারা হলেন- সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যাত্রাবাড়ী থানা সাবেক (ওসি) আবুল হাসান, এনটিএমসি'র সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলা সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, মিরপুরের সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক, ঢাকা উত্তর ডিবি সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
আইএ