রাজশাহী : রাজশাহীর পুঠিয়ায় বড় বোনকে পাহারা দেয়ার অজুহাতে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্কুলছাত্রীকে (শালীকা) নিজের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেছে লম্পট দুলাভাই। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে গত বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মেয়েটি।
পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় মেয়ে জামাইকে প্রধান আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা।
মৃত ওই স্কুলছাত্রীর নাম, ইভা খাতুন (১২)। সে উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের দড়িদ্র ভ্যানচালক সেলিম হোসেনের মেয়ে। এবং পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। আর লম্পট দুলাভাই এখলাস আলী উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের হলহোলিয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। ঘটনার পর তারা বাবা ছেলে পলাতক রয়েছেন। তবে এজাহারভুক্ত এখলাসের মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ইভার পিতা সেলিম হোসেন জানান, প্রায় তিনমাস আগে জিউপাড়া ইউনিয়নের হলহোলিয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে এখলাস আলীর সাথে আমার বড় মেয়ের বিয়ে দেন। প্রায় ১৫ দিন আগে মেয়ের শ্বশুর-শ্বাশুড়ি অন্য জায়গায় বেড়াতে গেলে বাড়িতে বড় মেয়ে একা হয়ে যায়। ইভারও স্কুল ছুটি ছিলো বিধায় দুই’বোন এক সাথে থাকলে ভালো হয় জানিয়ে জামাই এখলাস এসে ইভাকে নিয়ে যায়। সেখানে এক সপ্তাহ থাকে। এর মধ্যে ইভাকে জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে বলে ইভা মায়ের কাছে স্বীকার করে।
তিনি আরো জানান, বিষয়টি তিনি জানার পর লম্পট এখলাসের বাড়ি থেকে বড় মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং মেয়ে জামাইয়ের পরিবারকে জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
ইভার মা জানান, বড় মেয়ের বাড়ি থেকে ইভা হঠাৎ বাড়িতে ফিরে আসে কিন্তু চঞ্চল মেয়ে গম্ভির হয়ে সারাদিন ঘরের মধ্যে থাকতো। কারো সাথে কোনো কথা বলতো না। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ঘটনার কথা খুলে বলেন।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার সকালে দু’মেয়েকে নাস্তা খাইয়ে ইভার বাবা ভ্যান চালাতে রাজশাহী শহরে যায়। দুপুরের দিকে মেয়েটি শয়ন কক্ষের তীরের সাথে ওড়না পেচীয় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। যাদের কারনে তার মেয়ে আতœহত্যা করেছে তিনি তাদের কঠিন শাস্তির দাবী করেন।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনেন। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং লজ্জায় মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চত হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, এঘটনায় মেয়েটি বাবা তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। মামলার প্রধান আসামী এখলাস আলী ও তার পিতা পলাতক রয়েছে। তবে মামলার তিন নম্বর আসামী এখলাসের মা জরিনা বেগম (৪৮) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এএস