ঢাকা: রাজধানীর কদমতলী থানার পশ্চিম মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) ওয়ারি বিভাগ।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, নিহত ইমন কাজীর (১৭) সঙ্গে ঘাতক আল-আমিন শেখের (৩৬) স্ত্রীর পরোকীয়া চলছিল। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে ইমনকে হত্যা করা হয়।
সোমবার (৫ জুন) বরিশালের জেলার হিজলা থানার গোবিন্দপুর খন্না এলাকায় আল-আমিনের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে এসব কথা বলেন।
মামলার বরাত দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, গত ৩ জুন ডিএমপির কদমতলী থানার পশ্চিম মোহাম্মদবাগ সোনা মারিয়া জামে মসজিদের দক্ষিণ পাশ থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি শনাক্ত করার পরে নিহতের বাবা মো. লিটন কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৫। এরই ধারাবাহিকতায় ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবির ওয়ারি বিভাগের ডেমরা জোনাল টিম তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িতকে শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে গতকাল সোমবার অভিযান চালিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যার বিষয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, নিহত ইমন ও আল-আমিন এক সঙ্গে অটোরিকশা চালানোর সূত্রে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। যার কারণে ভুক্তভোগী ইমন ঘাতক আল আমিনের বাসায় যাতায়াত করত। এক পর্যায়ে আল-আমিনের স্ত্রী মোছা. তানিয়া বেগম (২২) এর সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইমনের অটোরিক্সায় তানিয়া বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করত। এ বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্যের সৃষ্টি হয়। প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে আল-আমিন। এরই অংশ হিসেবে ইমনকে পাঁচ হাজার টাকা ধার দেয়। পরবর্তীতে সেই টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আল-আমিন। পরে ৩০ মে ইমনকে কৌশলে বাসা ডেকে নিয়ে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায়। খাওয়ার পর তাদের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে ইমনকে ধাক্কা দিলে দেয়ালের সঙ্গে আঘাত খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরবর্তীতে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
লাশ গুমের বিষয়ে তিনি বলেন, হত্যার পরে নিহত ইমনের অটোরিকশাটি গেন্ডারীয়া থানার গঙ্গা শাহ মাজারের সামনে ফেলে আসে। পরে বাসায় এসে ঘুমায়। ঘুম শেষে দোকান থেকে বস্তা কিনে বাসায় নিয়ে যায়। এরপর বস্তায় লাশ ভরে নিজের অটোরিকশায় করে নিয়ে পশ্চিম মোহাম্মদবাগ সোনা মসজিদের পাশের একটি খালি প্লটে ফেলে আসে। এরপর বরিশালের হিজলা উপজেলায় শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে।
সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :