ঢাকা: সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের দূর্গম পাহাড়ের অভিযান চালিয়ে 'ইমাম মাহমুদের কাফেলা' নামের একটি নতুন সংগঠনের ১০ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন (সিটিটিসি)।
অভিযানের আগেই ডাক্তার জামিল ও নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী ফাহিম পালিয়ে যায়। জানা গেছে, ফাহিম যশোর জেলা স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী। তার বাড়ি জেলার কোতোয়ালি উপজেলায়। তার বাবা যশোর জেলায় কর্মরত আইনজীবী আয়ুব খান বাবুল।
ছেলেকে উগ্রবাদী পথ থেকে ফিরে আসার আহবান জানিয়ে বাবুল বলেন, স্কুলে পড়ার সময়ে পড়াশোনাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় দক্ষতার স্বাক্ষর রাখা ফাহিম খান(১৭) ২৮ জুলাই সকালে বাসা থেকে কেউরে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকেই নিখোঁজ।
যশোর জেলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে জিপিএ ৫ গোল্ডেন রেজাল্ট নিয়ে পাশ করে নটরডেম কলেজে ভর্তি হয় ফাহিম। কলেজে ভর্তি হওয়ার পরে সে হোস্টেলেই থাকত৷ প্রথম বর্ষে ভালো ফলাফল করলেও পরবর্তীতে অসুস্থ থাকায় পড়াশোনায় একটা গ্যাপ পরে। ফলে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। এ কারণে সে মানসিকভবে একটু বিষন্ন ছিলো। পাশাপাশি তার পিছিয়ে যাওয়ার কারণে পরিবার থেকে একটু চাপ দেওয়ায় নিজেকে একটু আড়াল করে রাখত।
ফাহিমের বাবা বলেন, পারিবারিক চাপ হোক কিংবা মোবাইল ফোন বা কোনো ব্যক্তি ও সংগঠনেট মাধ্যমে হোক কোনো একটি ভাবে সে এই সংগঠনের মাধ্যমে জড়িয়েছে। সে নিখোঁজ হওয়ার পরে ২৮ জুলাই যশোরের কোতওয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর তার সন্ধান পেতে গোয়েন্দা পুলিশ ও ঢাকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি আপনাদের মাধ্যমে আমি আমার ছেলেকে ফিরে আসার আহবান জানাচ্ছি।
ছেলেকে ফাহিমকে ফিরে আসার আহবান জানিয়ে ভুক্তভোগী এই বাবা বলেন, ফাহিম তুমি যেখানেই থাকো ফিরে আসো। সরাসরি পরিবার কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হোক তুমি ফিরে আসো। তোমাকে হারিয়ে আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে। বাবা তুমি যা পারো তাই করে খেয়ো, আমরা আর পড়াশোনা নিয়ে চাপ দিবো না। কিন্তু তুমি যদি অসৎ ব্যক্তি বা সংগঠনের মাধ্যমে ভুল পথে যেয়ে থাকো তুমি ফিরে আসো। আজ ১৬ দিন তোমাকে না পেয়ে পৃথিবী অচল। অনেক কষ্ট করে তোমাকে বড় করেছি।
জানা গেছে, চার ভাই-বোনের মাঝে বড় ফাহিম গাইনোকমাসিয়া, একটি নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলো।
ছেলের পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরবানি ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসার পরে দেখতে পাই তার মুখে দাঁড়ি। মাঝে মাঝে নামাজ পড়ত। অথচ রোজার সময় হাফ প্যান্ট পড়ত। তেমনভাবে ধর্ম পালন করত না। বাড়ি ছাড়ার আগে বন্ধুদের ঘুর যাওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে পরিবর্তন আসে একাই চলে যায়। তবে যাওয়ার সময় কোনো টাকা পয়সা নিয়ে যায় নি।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :