ঢাকা: রাজধানীর সাভারে গোলাম কিবরিয়া নামের এক শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার (২১ আগস্ট) রাতে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে প্রেরিত এক বার্তায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বহুল আলোচিত রাজধানীর সাভারে গোলাম কিবরিয়া নামক একজন শিক্ষক'কে হত্যার পর চিরকুট লিখে ফেলে রাখার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ইমনসহ জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এতে আরো জানানো হয়, যশোর, ঝিনাইদহ ও রংপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর শিক্ষকের বাসা থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়া ৫ লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১১ টায় কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানাবেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
উল্লেখ্য, সাভার পৌর এলাকায় নিজ ঘর থেকে গতকাল রোববার বিকেলে গোলাম কিবরিয়া (৪৩) নামের প্রাক্তন এক স্কুলশিক্ষকের হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের পাশে চিরকুট পাওয়া গেছে। তাতে লেখা, ‘এই ব্যক্তি নৈতিক স্খলনে জড়িত, পুলিশ ভাই। আমরা তাই মেরে ফেলেছি। সে অবৈধ কাজ করে।’ হত্যাকারীরা নিজেদের ইসলামের সৈনিক বলে দাবি করেছে।
পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটপাড়া মহল্লার মৃত শুকুর মুন্সির ছেলে গোলাম কিবরিয়া একসময় সাভার মডেল স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যাচ পড়াতেন।
জানা গেছে, গোলাম কিবরিয়া শিক্ষকতা ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে টিউশনি করতেন। আবার জমি-জমা বেচাকেনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। শনিবার রাতে টিউশনি শেষে রিকশায় বাসায় ফেরেন কিবরিয়া। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় ভাইদের সঙ্গে বসবাস করতেন। নিজের কক্ষ থেকে বের হতে না দেখে দুপুরে স্বজনরা ডাকাডাকি করতে থাকেন। পরে বিকল্প দরজা দিয়ে তাঁর কক্ষে প্রবেশ করে দেখা যায়, খাটের ওপর লাশ পড়ে আছে। দুই হাত ও দুই পা লুঙ্গি দিয়ে বাঁধা আর গলায় গামছা পেঁচানো। বাসার জিনিসপত্র এলোমেলো।
গোলাম কিবরিয়ার ছোট ভাই আপেল মাহমুদ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পায়ে সমস্যা থাকার কারণে দীর্ঘক্ষণ হাঁটতে পারতেন না। তাই একটি নির্দিষ্ট রিকশাযোগে জায়গায় যাতায়াত করতেন। কে কেন কারা তাঁকে হত্যা করল, এটা জানা নেই।’
গোলাম কিবরিয়ার মরদেহের পাশে পাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল, ‘সে অবৈধ কাজ করে, আমরা ইসলামের সৈনিক। আমরা তাই (তাকে) মেরে ফেলেছি।’ তবে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে চিরকুটে কী লেখা আছে, তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে।
সোনালীনিউজ/আইএ