ঢাকা: ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদের শ্বশুর সোলায়মান মিয়ার নামে উত্তরায় মিলিনিয়াম টাওয়ার নামে ১০ তলা ভবনের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দালিলিকভাবে শ্বশুরের নামে হলেও আদতে হারুনের অবৈধ আয় গোপন করতে ওই সম্পদ গড়েছেন বলে মনে করছে দুদক। উত্তরার ৭ নম্বর রোডের ২ নম্বর বাড়িটিতে রয়েছে মার্কেটসহ বিভিন্ন কোম্পানির অফিস।
ইতোমধ্যে ওই ভবন নির্মাণ ও জমি ক্রয় করার অর্থ কোথা থেকে এসেছে তার উৎস জানতে হারুন অর রশীদের শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী ৩ নভেম্বর তার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে।
একই দিন পৃথক পৃথক চিঠিতে তলব করা হয়েছে হারুন অর রশীদের চাচা ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, মতিউর রহমান, খালা মিনারা বেগম, মামা সুমরাজ মিয়া, ব্যবসায়িক অংশীদার আলাউদ্দিন আল সোহেল, রাকিব উদ্দিন দেওয়ান রতন এবং চাচাতো ভাই আল রাসেলকে।
অন্যদিকে প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তার প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডের মালিকানা ও তার ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ওই টাকা ঋণ হিসেবে দেখালেও কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ঋণ দিয়েছে সে বিষয়ে আয়কর ফাইলে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। এ বিষয়টি জানতে স্ত্রীকেও তলব করা হয়েছে বলে জানা গেছে। একই দিন তলব করা হয়েছে মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, তার মা ও প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান জহুরা খাতুন, ভাই ও এমডি এবিএম শাহরিয়ারকে।
সব মিলিয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ, তার স্ত্রী, মা, ভাই ও শ্বশুরসহ ১২ আত্মীয়-স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন সই করা চিঠিগুলো সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়।
গত ১৮ আগস্ট আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরের দিন ১৯ আগস্ট সংস্থাটির উপপরিচালক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিগত সরকারের সময় প্রভাবশালী পুলিশের এই কর্মকর্তার রাজধানীতে দুই ডজন বাড়ি, অর্ধশতাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই ও জেদ্দাসহ বিদেশেও গড়েছেন অঢেল সম্পদ। অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংক, সাব রেজিস্ট্রি, পাসপোর্ট, নির্বাচন কমিশনসহ অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।
আইএ