ঢাকা: সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এ ছাড়া সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকার বেশি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পাশাপাশি সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, দৈনিক প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশে চলাচলের জন্য ওবায়দুল কাদের ও সাবেক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী পছন্দের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ১৩৭টি বাস কিনতে চেয়েছিলেন; কিন্তু সেটা করতে না পেরে পুরো প্রক্রিয়াকে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এই অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারোয়ারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান থাকাকালে গুলশান শাখা থেকে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ব্লুমুন ট্রেডিং লিমিটেড, এক্সিস বিজনেস লিমিটেড, এভারেস্ট এন্টারপ্রাইজ, গ্লোয়িং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ভিস্তা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও স্কাইমার্ক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের নামে ১ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এই ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারোয়ারের যোগসাজশ রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আজ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। এ ছাড়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ ও ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঘুষ, দুর্নীতি ও বদলি–বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫৪২ কোটি টাকা অর্জন ও পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এ ছাড়া মিরপুর এলাকায় ৭০০ একর সরকারি খাসজমি দখল, দুর্নীতি ও অনিয়ম করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
এদিকে এস আলমের দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলমের অপ্রদর্শিত ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ জালিয়াতির মাধ্যমে বৈধ করে দিয়ে ৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এ অভিযোগে অতিরিক্ত কর কমিশনার সাইফুল আলম, যুগ্ম কমিশনার এ কে এম শামসুজ্জামান ও সহকারী কর কমিশনার আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
এদিকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৮ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। দুদক সূত্র জানায়, তার ৬৫টি ব্যাংক হিসাবে ৪৩ কোটি ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭৫ টাকা লেনদেন হয়েছে।
এআর