Menu
ঢাকা : রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় মেহেবুল হাসান (৩৭) ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার ইপ্তিকে (২৮) ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত পুরো চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মোবারক হোসেন (২৫), রবি রায় (২২), মো. আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির (২২), সজীব (২০) ও মেহেদী হাসান সাইফ (২৪)।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তাররা মূলত একটি গ্যাং। গ্যাংটির দুই সদস্য বিকট শব্দে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে রিকশা যাত্রীদের সঙ্গে বাগ্বিতন্ডায় জড়ায়। এসময় ভিকটিম মেহেবুল হাসান তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করলে তার ওপর হামলা করা হয়।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান।
তিনি জানান, গত সোমবার রাত আনুমানিক ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে সংবাদ পাওয়া যায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডের বাসার সামনে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এক দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছে। এ সংবাদে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের একটি টহল টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের সহায়তায় ঘটনায় জড়িত মো. মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার ইপ্তি বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আব্দুল্লাহপুর পশ্চিম পাড়া থেকে রামদা দিয়ে ভুক্তভোগীদের কুপিয়ে জখম করা আসামি আলফাজ মিয়া ওরফে শিশিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীকালে আলফাজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকা থেকে সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা অপর এক আসামি মেহেদী হাসান সাঈফকে টঙ্গীর মাজার বস্তি এলাকা থেকে বুধবার ভোরে গ্রেপ্তার হয়। সাঈফের হেফাজত থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও ঘটনার সময় তার পরিহিত একটি শার্ট জব্দ করা হয়।
এছাড়া আজ সকালে আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির ও মেহেদী হাসান সাইফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ নদীর পাড় থেকে ঘটনায় সময় ব্যবহৃত দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়।
ওইদিন যা ঘটেছিল: পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই রাতে মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তি দম্পতি উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আমির কমপ্লেক্স থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় ৭ নম্বর সেক্টরের ওই স্থানে তিন ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দ করে এলোমেলোভাবে চালিয়ে যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল সামনে থাকা একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। রিকশাটিতে ৪ বছরের একটি শিশু তার মায়ের সাথে ছিল। শিশুটির বাবা রিকশা থেকে নেমে মোটরসাইকেল চালক গ্রেপ্তার আসামি মো. মোবারক হোসেনের সাথে বাগ্বিতণ্ডা শুরু করে। ওই সময় রিকশার পিছনে থাকা ভুক্তভোগী দম্পতি তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করে। সেসময় রিকশার যাত্রীরা চলে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন মেহেবুল হাসানের সাথে তর্ক শুরু করে এবং এক পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করে।
এ সময় তারা বলতে থাকে আমাদের চিনিস? আমরা কে?। সে সময় ভিকটিম দম্পতি আশেপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আক্রমণকারী একজনকে ধরে ফেলে ও তার মোটরসাইকেল আটক করে। এ সময় ফোন করে সে তার আরও কয়েকজন সহযোগীদের ডেকে নিয়ে আসে। তারা দেশীয় অস্ত্র রামদাসহ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত জনসাধারণের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে রামদা দিয়ে মেহেবুল হাসানকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে।
এ সময় নাসরিন আক্তার ইপ্তি তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকেও রামদা দিয়ে আঘাত করে। এতে ওই দম্পতি শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। খবর পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের টহল টিম দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের সহায়তায় মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, আহত দম্পতি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এমটিআই
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সোনালীনিউজ.কম
Powered By: Sonali IT