• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

নতুন এমডি নিয়োগে ন্যাশনাল ব্যাংকের বোর্ড সভা বিকেলে


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৬, ২০২১, ১২:৪০ পিএম
নতুন এমডি নিয়োগে ন্যাশনাল ব্যাংকের বোর্ড সভা বিকেলে

ফাইল ছবি

ঢাকা: আগামী ২৮ এপ্রিলের মধ্যে স্থায়ী ব্যবস্থাপনা পপিচালক (এমডি) নিয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে আজ জরুরী বৈঠকের বসছে  ন্যাশনাল ব্যাংককে পরিচালনা পর্ষদ। এতে ব্যাংকটি ব্যর্থ হলে আইন অনুযায়ী প্রশাসক বসাবে কেন্দ্রী ব্যাংক।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল তিনটায় জরুরি বোর্ড সভা ডেকেছে ব্যাংকটি। ভার্চুয়ালি এ সভায় এমডি নিয়োগের বিষয় সিদ্ধান্ত হবে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম  বলেন, সোমবার (১৯ এপ্রিল) এমডি নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ২৮ এপ্রিলের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৫ (ক) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী ব্যবস্থা নিবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৫–ক ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের এমডি পদ একাধারে তিন মাসের বেশি শূন্য রাখা যাবে না। ৩ উপধারায় বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে এমডি পদ পূরণ না হলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারে, যিনি ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পালন করবেন। আইন অনুযায়ী আগামী ২৮ এপ্রিলের মধ্যে এমডি নিয়োগ না দিলে ব্যাংকটিতে প্রশাসক দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে ঋণ বিতরণে অনিয়ম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) না থাকা, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরিচালনা পর্ষদে শুরু হয়েছে বিবাদ। সব মিলে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে ন্যাশনাল ব্যাংকে।

এর আগে ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি এ এস এম বুলবুল এমডির দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে সরিয়ে দিতে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মনোয়ারা সিকদার তার মেয়াদ বাড়ান, যা কার্যকর হয় ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু বিষয়টি বিধি পরিপন্থী হওয়ায় তাকে চলতি দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে আরেকবার (৬ এপ্রিল) নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই নির্দেশের পর এ এস এম বুলবুলকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আবদুল বারীকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেয় ব্যাংকটির পর্ষদ। ২৮ এপ্রিল ব্যাংকটির স্থায়ী এমডি পদ শূন্য থাকার তিন মাস পূর্ণ হবে।

ন্যাশনাল ব্যাংক চলছে অনেকটা সিকদার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। দীর্ঘদিন এর চেয়ারম্যান ছিলেন জয়নুল হক সিকদার। গত ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। এরপর কোনো পর্ষদ সভা হয়নি। কিন্তু ঋণ বিতরণ অব্যাহত রাখা হয়েছে, যেখানে বেশকিছু অনিয়মের ইঙ্গিত পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। (সাধারণত বড় ঋণ বোর্ডসভায় অনুমোদিত হতে হয়)।

ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকটি নতুন করে ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ১১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ঋণের ওপর প্রথম প্রান্তিকে সুদ যুক্ত হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। সব মিলে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। তবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে মাত্র ৫২১ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির ৪০টি শাখা লোকসানে রয়েছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকটির ঋণ ছিল ৪০ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা, চলতি বছরের মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ৪২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। মার্চে বেড়ে হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।

১৯৮৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ন্যাশনাল ব্যাংক।

সোনালীনিউজ/আরএইচ

Wordbridge School
Link copied!