• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১
৬৬ কোটি টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ

বানকো সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধের সিদ্ধান্ত


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৫, ২০২১, ০১:১০ এএম
বানকো সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধের সিদ্ধান্ত

ঢাকা : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য বানকো সিকিউরিটিজের লিমিটেডের লেনদেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।

সোমবার (১৪ জুন) ডিএসইর পর্ষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ডিএসই সূত্র মতে, বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের কনসোলিডেটেড কাস্টোমার এ্যাকাউন্টে ৬৬ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে। এই অভিযোগে মঙ্গলবার থেকে প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন বন্ধ রাখার নিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সাথে কোম্পানির সাথে সম্পৃক্ত চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছিলো ডিএসই। একই সাথে গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই)।

ডিএসইর সূত্র মতে, কোম্পানিতে মোট ৮জন পরিচালক রয়েছেন। বর্তমানে কোম্পানির চেয়ারম্যান হলেন-আব্দুল মুহিত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন শামিউল ইসলাম। তাদের দুই জনের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছে। তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন টাকা আত্মসাতের।

একটি সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন বানকো সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামিউল ইসলাম।

এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বানকো সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অভিযোগে গ্রাহকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ৯০ শতাংশ অভিযোগ হলো গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের। যারা গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থানে যাওয়া প্রয়োজন। ডিএসই যদি বানকো সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধ করে থাকে, তাহলে অনেক ভালো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারী থাকলে শেয়ারবাজার থাকবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিএসইসি সব সময় বদ্ধপরিকর। কোন প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে নয়-ছয় করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এর আগে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতে প্রায় ২ মাস বন্ধ রাখা হয় ডিএসইর কার্যক্রম। খোলার পরেও কোন ধরণের ঘোষণা ছাড়াই গ্রাহকদের টাকা সরিয়ে মতিঝিলের ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা করে বিনিয়োগকারীরা। সে মামলায় গত ৬ জুলাই ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদ উল্লাহ ও তার স্ত্রী পরিচালক নিপা সুলতানাকে গ্রেফতার করে ডিবি।

পরে সংবাদ সম্মেলন করে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন জানান, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজে আনুমানিক ২২ হাজার বিও অ্যাকাউন্টধারীর শেয়ার কেনাবেচার ১০০ কোটি টাকা ছিল। শহিদুল্লাহ ২২ তারিখে তার প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ কোটি টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে সরায়। বিনিয়োগকারীরা যখন দেখলো যে অ্যাকাউন্টে টাকা নেই, তখন তারা অফিসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলো। তখন দেখে অফিসে তালা দিয়ে শহিদুল্লাহ, তার স্ত্রী ও ভাই পালিয়ে গেছে।

শহিদুল্লাহকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আবদুল বাতেন জানান, তিনি (শহিদুল্লাহ) স্বীকার করেছেন যে আত্মসাতের জন্যই টাকা তুলে পালিয়েছিলেন। এছাড়া আরেকটি অবৈধ কাজ করেছেন তারা। নিয়ম অনুযায়ী তারা শুধু এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্ট খুলে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। তবে তারা প্রায় ৬০০ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর নিয়ে ডিডের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা নিয়ে তাদের মাসে মাসে লভ্যাংশ দিচ্ছেন, যেটা আইনত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই টাকাটা মেরে দেয়ার জন্যই তিনি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে চলে গেছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!