ঢাকা : রাষ্ট্রায়ত্ত যে-কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চায় পদ্মা ব্যাংক। তাদের এমন প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক সংক্রান্ত এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রী এ কথা জানান।
বেসিক ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক মার্জড হওয়ার আগ্রহের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকগুলো মার্জ হবে, সেগুলো মোটামুটি ড্রাফট স্টেজে আছে। আমাদের ড্রাফট হয়ে গেছে, সেটিকে আমরা সংসদে নিয়ে আসব এবং সেখানে অনুমোদন হওয়ার পর মার্জের কার্যক্রম শুরু হবে।’
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের একীভূতের প্রস্তাব প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি এখনো আবেদন পাইনি। পদ্মা ব্যাংক সম্পর্কে একটি বিষয় আপনাদের অবশ্যই জানা আছে, সেটি হলো ব্যাংকটির বর্তমান ওনারশিপ স্ট্রাকচারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সবগুলোই জড়িত। তার মধ্যে সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা সবগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেরই শেয়ার আছে। সেভাবেই ব্যাংকটি পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে যে বোর্ড রয়েছে, জনতা, সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ব্যাংকও আছে। অফকোর্স আমরা এ প্রস্তাব বিবেচনা করতে পারি। আইনটি আগে হতে হবে, যার পরিপ্রেক্ষিতে এটি হবে।’
পদ্মা ব্যাংকের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তারা ব্যাংকটি ভালোভাবে চালাতে পারেননি। সেখানে অনেক দুর্নীতি হয়েছে আপনারা জানেন, আমরাও শুনেছি। কীভাবে দুর্নীতিতে জড়িত হয়েছে, সেটা এখনো আমরা জানতে পারিনি। কারণ যারা অন্যায় করেছে, দুর্নীতি করেছে, তার প্রাইমারিলি স্টেটমেন্ট ছিল। সেটির ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং তারা এখন জেলে আছে।’
‘যারা অন্যায়-অপরাধ করবে, তাদের বিরুদ্ধে যে আইনি প্রক্রিয়া আমরা তাদের সেই আইনের আওতায় এনেছি এবং তারা জেলে আছে। ব্যাংকটিতে যারা শেয়ারহোল্ডার, যারা ঋণগ্রহীতা বা ডিপোজিট রেখেছে, সেটিও আমাদের দেখতে হবে। ব্যাংকটি যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, চলমান রাখার জন্যই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছে’, বলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
পদ্মা ব্যাংকের ফান্ড রাইজের দায়িত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে বা আমি নিজে এমন কোনো আবেদন এখনো পাইনি। পত্রপত্রিকায় যা এসেছে, সেটা আমরা দেখেছি। সবাই তো চেষ্টা করতে পারে বিদেশ থেকে টাকা আনার জন্য। কিন্তু বিদেশিরা যদি পদ্মা ব্যাংকের ব্যালেন্সশিট দেখে মনে করে, বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত, তারা বিনিয়োগ করবে। পদ্মা ব্যাংকে এমন কোনো রেস্ট্রিকশন নেই, যে পারবে না। তবে তাদের কমপ্লায়েন্স থাকতে হবে।’
সোলার পাওয়ারের কন্ট্রাক্ট পানামাকে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পানামা নামের একটি দেশ আছে, এটি সেই পানামা। যে প্রতিষ্ঠান নিয়ে কন্ট্রোভার্সি, সেই পানামা এ পানামা নয়। আমার মনে হয়, পানামা নামের কোম্পানিটি বিতর্কিত, সেটি আমরা জানি। তাই আমরা সাবধানতা অবলম্বন করি।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘পানামা পেপারস, যেখানে অনেকের টাকা ছিল, যা আপনারা পত্রপত্রিকায় দেখেছেন, আমরাও দেখেছি। সেখানে ডিটেইলে গিয়ে এমন কিছু আমরা পাইনি। পানামা পেপারস আর পানামা এক না। হতে পারে এটা ভিন্ন কোম্পানি। পাওয়ার প্ল্যান্টটিতে সরকারের কোনো বিনিয়োগ নেই। এখানে তাদের সঙ্গে যে চুক্তি তা হলো, তারা পাওয়ার প্রডিউস করবে, তারপর সরকার তা কিনে নেবে। পুরো বিনিয়োগটা জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি। সরকার এখানে ফাইন্যান্স করছে না।’
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :