• ঢাকা
  • রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১
সয়াবিন ও পাম তেল মজুতের অভিযোগ

কৃত্রিম সংকট ভোজ্যতেলের


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১৯, ২০২১, ১১:২২ এএম
কৃত্রিম সংকট ভোজ্যতেলের

ঢাকা : বেশি মুনাফার আশায় এবার সয়াবিন ও পাম তেল মজুতের অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এতে বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি লিটার সয়াবিন ১৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে। এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবের অনুমোদন পেলেই কার্যকর হবে। এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সয়াবিন ও পাম তেল মজুতের খবর পাওয়া গেছে।

বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দর অনুযায়ী প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৯ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন ১৫৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৭২৮ টাকা ও পাম তেল প্রতি লিটার ১১৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কিন্তু আবারো সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে সয়াবিন তেল পরিশোধনকারী মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

এরই মধ্যে সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের মজুত পরিস্থিতি, আমদানি ও দাম নির্ধারণী সভা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। সভায় ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

অতিরিক্ত সচিব সফিকুজ্জামান জানিয়েছিলেন, সভায় মিল মালিকরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেন। আলোচনা শেষে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ১৬০ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৭৬০ টাকা, আর পাম অয়েল প্রতি লিটার ১১৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিবের অনুমোদন পেলে এ দর কার্যকর হবে।

এই সংবাদ ছড়িয়ে যাওয়ার পর থেকেই ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। তাই তারা সয়াবিন ও পামতেল বিক্রি করা কমিয়ে দিয়ে মজুত করছেন। বেশি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা এ কাজটি করছেন বলে দাবি ভোক্তারা।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বসবাসকারী বেমরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী বাবলু হোসেন জানিয়েছেন, মহল্লার কয়েকটি দোকানে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে পাইনি।

দোকানদাররা জানিয়েছেন, কোম্পানির গাড়ি আসেনি। কারওয়ানবাজারে গিয়েও নাকি তারা তেল পাননি। তাই মহল্লার দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রি করতে পারছেন না।

জানা গেছে, কিছুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে বাজারে আবারো সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী মিল মালিকরা। তারা বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৭ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, সয়াবিন তেল পরিশোধনকারী মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাব ছিল বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা করার। ট্যারিফ কমিশন একাধিকবার বসে অ্যানালাইসিস করে ১৬২ টাকা (বোতলজাত সয়াবিন তেল) করার সুপারিশ করেছে। এটা ছিল সেপ্টেম্বর মাসের অ্যাভারেজ রিপোর্ট।

এবার দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ঠিক করা হয়েছে ১৬০ টাকা, যেটার আগে দাম ছিল ১৫৩ টাকা। সভায় খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৭৬০ টাকা, আর পাম অয়েল প্রতি লিটার ১১৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বর্তমানে নির্ধারিত দাম হচ্ছে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১২৯ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৭২৮ টাকা ও পামতেল প্রতি লিটার ১১৬ টাকা। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা বিক্রেতা খলিল রহমান জানান, সয়াবিনের সরবরাহ খুবই কম। চাহিদা অনুযায়ী তেল পাচ্ছি না। যাদের কাছ থেকে পণ্য আনি তারা বলে দিয়েছেন সরবরাহ কম।

আগামী ২/১ দিন এমন অবস্থা চলতে পারে বলেও আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, সামনে নাকি তেলের দাম আরো বাড়বে, পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদেরকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা মজুতের বিষয়টি অস্বীকার করে জানিয়েছেন, মিল কর্তৃপক্ষ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন পাচ্ছি না, পাম ওয়েলও পাচ্ছি না। খুচরা বিক্রেতাদের আমরা চাহিদা অনুযায়ী পণ্য দিতে পারছি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক কাজী সালাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, আমাদের কোম্পানির সরবরাহ সিস্টেমে কোনো ত্রুটি নাই। কোনও সংকটও নাই। সরবরাহ সিস্টেম ঠিকই রয়েছে। আমরা টিসিবিকেও সয়াবিন তেল দিচ্ছি। বাজারেও দিচ্ছি। আমাদের সাপ্লাই চেইনে কোনো সমস্যা হয়নি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!