ঢাকা: ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। যা আগের ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাসের চেয়ে কম। আগের অর্থবছরে ১১ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৬৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
তবে, চলতি অর্থবছরের শেষ সময় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বেড়েছে। গত মে মাসেই সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) বাস্তবায়ন হার চলতি অর্থবছরের ১১ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমনকি গত পাচঁ অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে এ মাসে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত ১১ মাসে এডিপি বাস্তবায়নে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ২১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সেখানে শুধু মে মাসে এডিপি বাস্তবায়নে খরচ হয়েছে ২৬ হাজার ৯৫৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাকি জুন মাসে খরচ করতে হবে ৯০ হাজার ৫৩৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
রোববার (১৮ জুন) চলতি অর্থবছরের মে মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ণ বিভাগ (আইএমইডি)। চলতি অর্থবছরের মে মাসের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসের এডিপি বাস্তবায়ন হার ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। যা করোনার সময় ছাড়া গত ৫ বছর অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ম। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের চেয়ে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ কম বাস্তবায়ন হয়েছে চলতি অর্থবছরে। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৬৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৬৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল।
তবে, সামগ্রিক অগ্রগতি কম হলেও মাসের হিসেবে মে মাসের এডিপি বাস্তবায়নের হার চলতি অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমনকী ২০১৮-১৯ অর্থবছর ছাড়া গত ৫ অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মে মাসে।
আইএমইডির প্রতিবদেন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মে মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ। যা ২০২১-২২ অর্থবছরে একই সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ১৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের শুরুর মাস জুলাইয়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগষ্টে ছিল ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ, অক্টোবরে ৪ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, নভেম্বরে ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ, ডিসেম্বরে ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, জানুয়ারিতে ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তবে, মার্চ থেকে বাস্তবায়ন হার বাড়তে থাকে। মার্চে বাস্তবায়ন হয় ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ, এপ্রিলে বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
হালনাগাদ তথ্য থেকে জানা গেছে, মে মাস পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ করেছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ২১ কোটি টাকা। আর শুধু এপ্রিলে খরচ হয়েছে ২৬ হাজার ৯৫৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের মে মাসে খরচ হয়েছিল ২০ হাজার ৮৯৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
এডিপি বাস্তবায়নে সব থেকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়। এখন পর্যন্ত তাদের বাস্তবায়ন মোট বরাদ্দের ৯৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থা থাকা জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ ৯২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ তৃতীয় সর্বোচ্চ ৮৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে সর্বোচ্চ ৮৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আইএমইডি ৮৪ দশমিক ৫২ শতাংশ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৮২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ ৮১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
এছাড়া ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৭৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ, শিল্প মন্ত্রণালয় ৭৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ৭৬ দশমিক ৪১ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৭৩ দশমিক ৪১ শতাংশ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ৭২ দশমিক ৪৬ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয় ৭১ দশমিক ৪৯ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে।
সোনালীনিউজ/এআর