ঢাকা: প্রায় সব ধরনের সবজির দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। দুটি সবজির কেজি একশ টাকার ওপরে। কয়েকটির দাম একশ টাকার কাছাকাছি। মাত্র একটি সবজি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ টাকার নিচে।
কয়েক মাস ধরেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। ফলে বাজারে গিয়ে কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছেন না ক্রেতারা। সবজির সঙ্গে মাছ ও মাংসের দামও অস্বস্তিতে ফেলেছে ক্রেতাদের।
এরমধ্যেই বাজারে নতুন করে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এক লাফে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। রাজধানীর বাজারগুলোতে এখন ৬০ টাকার নিচে এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচের পোয়া বিক্রি করছেন ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। হুট করে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল এক পোয়া কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ আড়তে যে দাম তাতে ৭০ টাকার নিচে এক পোয়া কাঁচামরিচ বিক্রি করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় মরিচের খেত নষ্ট হয়েছে। আবার কিছুদিন পর ঈদ, পরিবহন চালকরা এখন গরু নিয়ে ব্যস্ত। এ কারণেও ঢাকায় মরিচ আসা কমেছে। সবকিছু মিলেই দাম বেড়ে গেছে।
ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর ও পাকা টমেটো। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। আর পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ, করলা, বরবটি, ঝিঙা, কচুর লতিসহ সব ধরনের সবজি। এক পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে করলা। এক কেজি কচুর লতি কিনতে যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ধুন্দলের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে করল্লা। ঢ্যাঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
বাজারে এখন সবচেয়ে কম দামের সবজি পটল। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচা পেঁপেও বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা হালি।
এদিকে এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গত সপ্তাহের মতো পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। রসুনও আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা এক কেজি রসুন কিনতে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দিতে হচ্ছে। আর দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা।
মুরগির বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রায়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রায়লার মুরগির দামে পরিবর্তন আসেনি। তবে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৭০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই মুরগির কেজি ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। আর গরুর মাংস আগের মতোই, অধিকাংশ বাজারে ৭৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি।
বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছের দাম অনেকটাই নিম্ন-মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে। বোয়াল, চিতল, আইড় মাছের কাজে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কাজে বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা। ছোট ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা।
সোনালীনিউজ/এআর