ঢাকা: রাজধানীসহ সারাদেশের বাজারে কাঁচা মরিচে আগুন লেগেছে। মরিচের ঝাঁজে হাত দিতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা।
রাজধানীর প্রায় প্রতিটি বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। এই মরিচের দাম হাত ঘুড়ে পাড়া মহল্লায় গেলেই হয়ে যাচ্ছে ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা।এই অবস্থায় দিশেহারা মানুষ না পারতে কিনে খাচ্ছেন কাঁচা মরিচ।
দেশে কাঁচা মরিচ আমদানি হওয়ার পরও এত দামের কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না সাধারণ ক্রেতারা। কাঁচা মরিচ যেন এখন সোনার হরিণ। এজন্য অবশ্য ক্রেতারা দায়ী করছেন সিন্ডিকেটকে। এই সিন্ডিকেটে ধবল ধোলাই হচ্ছেন দেশের নাগরিকরা।
শনিবার (১ জুলাই) রাজধানীর অন্তত চারটি বাজার ঘুড়ে দেখা গেছে কাঁচা মরিচের দাম একেক স্থানে একেক রকম। কারওয়ান বাজারের পাইকারী বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ৫০০-৬০০ টাকা। সেই কাঁচা মরিচ নিউ-মার্কেট, মগবাজার, শান্তিনগর ও মহাখালিতে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। যা ক্রেতাদের ক্রয়সীমার বাইরে।
রাজধানীর বাইরেতো কাঁচা মরিচের দাম আরো বেশি। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের সদর শৈলকুপাসহ প্রায় প্রতিটি হাটেই ১ কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা দরে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, জীবনে এই প্রথম কাঁচামরিচের এত দাম দেখলেন।
ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচের দাম হাঁকা হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ টাকা। জেলার পাইকারি আড়তে কাঁচা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি আর খুচরা বাজারে ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
কুষ্টিয়া ও খুলনাতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজিতে।
লক্ষ্মীপুরের বাজারে ৮০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। এতে মসলা জাতীয় এ পণ্যটির ঝাল ক্রেতাদের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।
ঈদ কেন্দ্র করে এবং আমদানি না থাকায় দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে ঠেকেছে বলে জানান বিক্রেতারা।
আকাশচুম্বী এমন দামে খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া আপাতত কাঁচামরিচের ঝাল নিতে পারছে না ক্রেতারা।
বগুড়া জেলার শেরপুর থানায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা কেজিতে। রফিকুল ইসলাম নামের এ ক্রেতা বলেন, ঢাকায় কি অবস্থা তা এখন জানি না। তবে গ্রামে এই দামেই কিনতে হচ্ছে কাঁচা মরিচ। যা আমাদের জন্য হতাশার। আর এত দাম দিয়ে কেনাও কঠিন।
বাগেরহাটে ৮০০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে কাচা মরিচ। মুহাম্মাদ মুকিমুল আহসান নামের এক ক্রেতা বলেন, এর কমে অত্র এলাকায় মরিচ পাওয়া যায়নি। এত দাম দেখে মাত্র ১০০ গ্রাম কিনে এনেছি।
রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বরের বাসিন্দা দেওয়ান রুমানা আফরোজ বলেছেন, ‘এখানে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা করে। সংসার চালাতে হবে বলে একশো গ্রাম কিনে এনেছি। খুব প্রয়োজন না হলে কিনতাম না।’
কাঁচা মরিচের নৈরাজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহনাজ সুলতানা সোনালীনিউজকে বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের কাছেও অভিযোগ এসেছে। আমরা শুনেছি বাজারে কাঁচা মরিচের দাম এক হাজার টাকা। অভিযান পরিচালনা করতে আমাদের বেশ কিছু অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। তারা যদি অনুমতি দেন তাহলে সকালে বাজারে অভিযান চালানো হবে।’
কাঁচা মরিচের সিন্ডিকেট নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সোনালীনিউজকে বলেন, ‘বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্ব ভোক্তা অধিকার ও বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের। আমরা সরাসরি কিছু করতে পারি না। তবে যদি মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে আমাদের সহযোগিতা চায় আমরা সেটা করবো। তাদের অভিযানে আমরা পুলিশ দিবো।’
সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ