• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩০

ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্য সব রেকর্ড ছাড়ালো


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১৭, ২০২৩, ১১:৩৬ এএম
ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্য সব রেকর্ড ছাড়ালো

ঢাকা : বাজারে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি ছাড়িয়েছে সব রেকর্ড। আলু, পেয়াজ, চাল সবজির বাজারের পাশাপাশি ডিমের দামও এখনো সাধারনের নাগালের বাইরে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণেও। এমন বাস্তবতায় এবার খোলাবাজারে ট্রাকসেলের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি শুরু করলো টিসিবি ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। ক্ষুদ্র খামারিদের কাছ থেকে ডিম কিনে শুরু হল এই উদ্যোগ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর্পোরেট খামারিরা এগিয়ে এলে সরকার নির্ধারিত দামে সারাদেশে ডিম পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবন চত্বরে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, এখানে ট্রাক সেলের মাধ্যমে সরকার ঘোষিত ন্যায্য মূল্যে ডিম বিক্রি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ এবং যারাই এখান থেকে কিনবে তারা কিছুটা স্বস্তি পাবে।

সম্প্রতি অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের অভিযানের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বসে গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এরপর সরকার নির্ধারিত দাম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোক্তা অধিকার ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে অভিযান চালায়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, অভিযানের ফলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রি হলেও গত ৮-১০ দিন ধরে ডিমের ডিমের দাম আবার বেড়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সরকার ঘোষিত মূল্যে (প্রতিটি ডিম ১২ টাকা মূল্যে) খোলা বাজারে ডিমের ট্রাক সেল কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাব দেয়।

টিসিবির কর্মকর্তা খলিলুর রহমান মনে করেন, নিয়ম মেনে বিভিন্ন এলাকায় সবাই সুশৃঙ্খল থাকলে ডিম বিতরণ কাজটি সুচারুরূপে করা যাবে।

এদিকে, আমদানির অনুমতি দেয়া ডিম আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে দেশে আসবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

রোববার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিপণনের অক্টোবর মাসের কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছিলেন তিনি।

এদিকে, বাজারে চলছে অস্থিরতা। বৃষ্টি আর শীতের অজুহাতে বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। বেশির ভাগ সবজিই ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন বাজার করতে আসা মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখনো পর্যাপ্ত সবজি আসেনি, যে কারণে দামও তুলনামূলক কিছুটা বেশি। তবে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে এই দাম কমে আসবে।

জারে ডিমের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১১শ’ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ায় বাজারগুলোতে ক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। এক ক্রেতা জানালেন, প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন উছিলায় বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে থাকেন। গত সপ্তাহে এবং এর আগের সপ্তাহে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে। একবার দাম বাড়ার পর আর কোনোভাবেই তা কমছে না।

ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি ডজনে দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। বড় বাজারে কিনলে ডিমের ডজন পড়ছে ১৬০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ ভোক্তাদের এখন একটি ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৫ টাকা।

মাছের বাজারে ইলিশ আকারভেদে ১০০০ থেকে ১৬০০ টাকা, রুই ও কাতল আকারভেদে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। চাষের কই ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও দেশি কই বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এ ছাড়া পাবদা ৪০০, তেলাপিয়া ২৫০ এবং পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ টাকায়। তবে অন্য দিনের মতোই চাষের মাছের চেয়ে নদীর মাছের দাম ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি।

বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। সাদা বেগুন ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর বেগুনি রঙের গোল বেগুনের দাম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। সবজির মধ্যে টমেটো ও গাজর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। করলা, ধুন্দুল, ঝিঙে, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, কচুর মুখী, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। ৮০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে হাতে গোনা দু’একটি সবজি। এরমধ্যে পটোল ও ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। তবে বাজারে সবচেয়ে সস্তার সবজি এখন পেঁপে, প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেনি, বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। সরকার আলু, দেশি পিয়াজ ও ডিমের দাম বেঁধে দিলেও কোনোটিই নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!