ঢাকা: ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি এখনও বন্ধ রয়েছে। আর দেশে মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুমও শেষ। সেই সঙ্গে হালি পেঁয়াজের ভরপুর মৌসুম শুরু হতে আরও কিছুদিন বাকি। এরই মধ্যে আরেক দফায় বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
গত দুদিনে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ টাকা। ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে, যা ছিল ১০০ টাকা। আর গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৪০ টাকা। তার আগের সপ্তাহে কেজি ছিল ৮০ টাকার মধ্যে।
অথচ বিগত বছরগুলোতে এ সময়ে পেঁয়াজের দর ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। সে দৃশ্য এখন শুধুই গল্প। চড়া দামে পেঁয়াজ কিনতে বিরক্ত ক্রেতারা।
এদিকে বেড়েই চলেছে মাছ-মাংসের দাম। স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। বাজারে যেনো চৈত্রের দাবদাহ শুরু হয়েছে। তবে সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমেছে আলু ও টমেটোর দাম। এ ছাড়া অন্যান্য শীতকালীন সবজির দাম এখনো ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। যদিও সপ্তাহের ব্যবধানে এখন কিছুটা কমেছে সবজির দাম। করোলা, ঢেঁড়সসহ দুই একটি সবজির দাম চড়া থাকলেও বেশিরভাগ সবজি কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারে পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, ‘গত বুধবার রাতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৮ থেকে ৮২ টাকা। বৃহস্পতিবার সকালেই কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৯৩ থেকে ৯৭ টাকা পর্যন্ত। মূলত পাইকারি বাজারে দর বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।’
এদিকে আজ বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা যা কিছু দিন আগে ৮০ থেকে ১০০ টাকা ছিল, সিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ টাকা, তবে বিঁচিযুক্ত সিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা আগে ছিল সর্বনিম্ন ৮০ টাকা। ফুলকপি, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এদিকে সরকার নির্ধারিত গরুর মাংস প্রতিকেজি ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি করার কথা থাকলেও ব্যবসায়ীরা হাটের জোগান কম থাকার অজুহাতে ৭৫০টাকায় বিক্রি করছে। ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা কেজি, ভেড়া ১০০০ কেজি, ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা কেজি, লাল লেয়ার মুরগি ২৮৫ কেজি,পাকিস্তানি জাতের সোনালি ২৮০-২৯০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি প্রতিকেজি ৫৪০ টাকা, হাঁস ৪২০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশি জাতের টেঙরা মাছ ১০০০ টাকা কেজি, মেনি মাছ কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, পাবদা ৮০০ টাকা কেজি, শিং মাগুর ১২০০ টাকা কেজি, চিতল ৬০০ টাকা কেজি, নদীর রুই ৬০০ টাকা কেজি, নদীর পাঙ্গাস কেজিপ্রতি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর চাষের টাটকিনি মাছ ৬০০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৯০০ টাকা কেজি, কৈ ১৫০০ টাকা কেজি, বড় চিংড়ি ৮০০ টাকা কেজি, রুই ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি।
রাজধানীর মগবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা ক্রেতা মোস্তফা বলেন, ‘শীতের মৌসুমে আমরা অতিরিক্ত বাড়তি দামে সব ধরনের সবজি কিনেছি। আগে কোন বছরেও সবজির দাম এতটা বেশি ছিল না। সব পণ্যের দামই চড়া।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের শেষ সময়ে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সবজির জোগান কম, গাড়ি ভাড়া বেশি হওয়ায় দাম বাড়ছে সব রকমের সবজির। তবে টমেটো আর আলুর দাম কমেছে।
অন্যদিকে বাজারে কমেনি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। যা দুই সপ্তাহ আগে আরও ১০-১৫ টাকা কম ছিল। একই ভাবে কিছুটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :