ঢাকা : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজে লাগা আগুনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খাতুনগঞ্জের চিনির বাজারে। আগুন লাগার কারণে বাজারে চিনির সরবরাহ ও দামে কোনো সমস্যা হবে না বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজারটিতে একদিনের ব্যবধানে প্রতি মণ চিনির দাম বেড়েছে ৬০-৭০ টাকা।
যদিও বাজারে চিনি সরবরাহে তেমন সঙ্কট নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে হঠাৎ এমন দাম বৃদ্ধিতে দায়ী করা হচ্ছে অসাধু সিন্ডিকেটকে।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এস আলম গ্রুপের মিলে আগুন একটি দুর্ঘটনা। এ সুযোগ পুঁজি করে ঢাকার মিল মালিকরা চিনির দাম বাড়াচ্ছেন। বড় মিল মালিকরা সরবরাহ কমিয়ে সঙ্কট তৈরি করলে পাইকারি কিংবা খুচরা উভয় বাজারে প্রভাব পড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারখানাটিতে ছিল অপরিশোধিত চিনি। সেগুলো পরিশোধিত হয়ে বাজারে আসতে সময় লাগত। এর মধ্যে দিনে দিনে চিনির দাম বাড়া অযৌক্তিক।
আগুন লাগা কারখানাটি এসআলম গ্রুপের মালিকানাধীন। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সেটি পরিদর্শন করেছেন শিল্পগ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
এ সময় তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে অপরিশোধিত চিনি রাখা ইউনিট-১ এ আগুন লেগেছে। পাশের পরিশোধিত চিনির গুদাম ও পরিশোধনের যন্ত্রপাতির ইউনিটগুলো অক্ষত আছে। পরিশোধিত চিনির মজুত অক্ষত থাকায় দুই-এক দিনের মধ্যে সরবরাহ শুরু হবে। চিনির সঙ্কট হবে না।
যদিও মঙ্গলবার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৭৫০ টাকায়। একদিন আগে অর্থাৎ সোমবার বাজারটিতে চিনি বিক্রি হয়েছিল ৬ হাজার ৬৮০ টাকায়। একদিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি চিনির দাম বেড়েছে ৭০ টাকা।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। তারা কোনো একটি অজুহাত পেলেই দাম বাড়িয়ে দিত। এখন তারা সুযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ব্যবহার করেছে অর্থাৎ দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ গুদামে যেসব চিনি ছিল সেগুলো অপরিশোধিত। এগুলো বাজারে আসতে আরো সময় লাগত। কিন্তু দিনে দিনে দাম বেড়ে যাওয়া একেবারেই অযৌক্তিক।
গতকাল সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে কর্ণফুলী নদীর পাশে ইছানগর এলাকায় এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ নামের কারখানাটির ইউনিট-১ এ আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন ইউনিটে সীমাবদ্ধ থাকলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত নির্বাপণ সম্ভব হয়নি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। এতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: মামুনুর রহমানকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এমটিআই