ঢাকা : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। তাদের এ বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরে সরকারের বাজেটের চেয়ে ১ দশমিক ৫৭ গুণ বেশি। এছাড়া এই বিকল্প বাজেটে আগামী ১০ বছরে ৭টি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এ বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির কার্যালয়ে এ বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আইনুল ইসলাম। এতে সূচনা বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ।
আইনুন ইসলাম বলেন, আগামী ১০ বছরে ৭টি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এ বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- ৭০-৮০ শতাংশ মানুষকে মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে উন্নীত করা, বৈষম্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনা, ধনির সম্পদ দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বণ্টন, উন্নয়নে দেশজ অর্থনীতিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব, মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক ও আলোকিত করার সুযোগ তৈরি এবং শোভন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট-মন্দাজনিত অনিশ্চিত বিদ্যমান। এসবের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে বলেও জানান তিনি।
অর্থনীতি সমিতির বাজেটে ২৪টি বিষয়ে ৩৪১টি সুপারিশ করা হয়। বাজেটে ১০ লাখ ২৪ হাজার ১১২ কোটি টাকা আসবে রাজস্ব থেকে। অন্যদিকে ১ লাখ ৭০ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। বিকল্প বাজেটে সরকারের আয়ের উৎস ২৭টি। নতুন উৎসের প্রস্তাব করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর, সেবা থেকে প্রাপ্ত কর, বিদেশি পরামর্শক ফি ইত্যাদি।
আইনুন ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন হবে না। এই বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে দরিদ্র-নিম্নবিত্ত শ্রেণির অবস্থান থেকে শক্তিশালী-টেকসই একটি মধ্য-মধ্যবিত্ত শ্রেণি অবস্থানে উত্তরণ করা সম্ভব।
কালো টাকা প্রসঙ্গে অর্থনীতি সমিতি বলছে, ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত ৫০ বছরে কালো টাকা ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আসন্ন বাজেটে মাত্র .৯৮ শতাংশ উদ্ধারের সুপারিশ করছি। সেখান আহরণ হবে ১০ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে ওই সময়ে বিদেশে অর্থপাচার হয়েছে ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে ০.৪৯ শতাংশ উদ্ধারের সুপারিশ করা হয়েছে। যার পরিমাণ হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর রাজস্ব খাত থেকে আসবে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা।
বিকল্প বাজেট সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও কনফারেন্সে দেশের ৬৪টি জেলা, ১৩৫টি উপজেলা এবং ৪৫টি ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি যুক্ত রয়েছেন।
এর আগে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছিল বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।
এমটিআই