• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বাজেট

দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের


নিজস্ব প্রতিবেদক:  জুন ৫, ২০২৪, ০৭:৫১ পিএম
দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের

ঢাকা: ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন হতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার (৬ জুন।জাতীয় সংসদে স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেটের মূল স্লোগান হতে যাচ্ছে সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে শুল্ক ও কর হ্রাস-বৃদ্ধির প্রস্তাবনা আসতে পারে। রাজস্ব আহরণ ত্বরান্বিত করতে এবং দেশীয় শিল্প সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে শুল্ক-কর বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকতে পারে বাজেটে। যার প্রভাবে অনেক পণ্যের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিবারের মতো আগামী বাজেটেও সিগারেট উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য স্তর বাড়ানো হচ্ছে। তাই সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়বে।

মোবাইল অপারেটরদের সিমকার্ড বিক্রির ওপর কর ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা হতে পারে। ফলে বাড়তি দামে সিমকার্ড কেনা লাগতে পারে ক্রেতাদের।

রাজস্ব আদায়ের আওতা বৃদ্ধি করলে মোবাইলে কথা বলতে আরো বাড়তি অর্থ গুনতে হবে ভোক্তাকে। বর্তমানে একজন ভোক্তা মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৭৩ টাকার কথা বলতে পারেন। বাকি ২৭ টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক হিসেবে কেটে নেয় মোবাইল অপারেটরগুলো। প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সেবার ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তা ৬৯.৩৫ টাকার কথা বলতে পারবেন।

বর্তমানে সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। বৈষম্য হ্রাসে বাজেটে এই সুবিধা বাতিল করে প্রস্তাবিত বাজেটে গাড়ি আমদানি করতে হলে সংসদ সদস্যদের ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাবনা আসতে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিলাসবহুল গাড়িতে শুল্ক ফাঁকি রোধে হাইব্রিড ও নন হাইব্রিড টাইপের গাড়ি ছাড় করতে কিছু সুনির্দিষ্ট শর্ত যোগ করা হচ্ছে প্রস্তাবিত বাজেটে। ফলে বিলাসবহুল গাড়ির দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

কোমল পানীয়, কার্বোনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকস, আমসত্ত্বের ওপর ভ্যাট পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে। এ ছাড়া কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ন্যূনতম কর আরও দুই শতাংশ বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ হতে পারে। ফলে বেশি দামে কিনতে হবে এসব পণ্য।

দেশে কাজুবাদাম চাষকে সুরক্ষা দেওয়ার অংশ হিসাবে খোসা ছাড়ানো কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে কাজুবাদামের দাম বাড়তে পারে।

গরমে স্বস্তি পেতে অনেকে এয়ারকন্ডিশন বা এসি কিনছেন। আগামী বাজেটে এসিকে বিলাসী পণ্য বিবেচনা করে দেশে এসি উৎপাদনে ব্যবহৃত কম্প্রেসার ও সব ধরনের উপকরণের শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। তাই এসির দাম বাড়তে পারে।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্য খাতকে সরকার ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে আসছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ফ্রিজ উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। যা আর বৃদ্ধি করা হবে না বলে জানা গেছে। ফলে নতুন অর্থবছরে পাঁচ শতাংশ ভ্যাটের হার বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করা হতে পারে।

বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত পানির ফিল্টার আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। দেশে উৎপাদন হওয়ায় পানির ফিল্টার আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। তাই গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত পানির ফিল্টারের দাম বাড়তে পারে।

বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ে অনেকে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করেন। নিকট-ভবিষ্যতে এলইডি বাল্বের দাম বাড়তে পারে। কারণ এলইডি বাল্ব এবং এনার্জি সেভিং বাল্ব উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যক্তিগত সিএনজি-এলপিজিতে কনভার্সন বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় বাড়াতে মনোযোগ দিয়েছে এনবিআর। গাড়ি সিএনজি-এলপিজিতে কনভার্সনে ব্যবহৃত কীট, সিলিন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক তিন শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করা হচ্ছে। এ কারণে গাড়ি কনভার্সন খরচ বাড়তে পারে।

লোডশেডিং মোকাবিলায় বাসাবাড়ি বা শিল্পে জেনারেটরের ব্যবহার বাড়ছে। সেখানেও নজর দিয়েছে এনবিআর। জেনারেটর সংযোজন ও উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ বা যন্ত্রাংশ আমদানিতে এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। তাই দেশের বাজারে জেনারেটরের দাম বাড়তে পারে।

রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরে বাসাবাড়ি, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাসেবা প্রায় অপরিহার্য। এ ধরনের নিরাপত্তাসেবায় ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বিদ্যমান। প্রস্তাবিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

কর ব্যতীত প্রাপ্তি (নন-ট্যাক্স রেভিনিউ) বাড়াতে আগামী বাজেটে জেলা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের হাটবাজারের ইজারামূল্য কিছুটা বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে জমির নামজারির মাশুলও (ফি)।

কিছু শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে রেফারেল বা বিশেষায়িত হাসপাতালের শুল্কছাড় সুবিধায় এক শতাংশ শুল্কে মেডিকেল যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির সুযোগ রয়েছে। আগামী বাজেটে ২০০টিরও বেশি মেডিকেল যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে, যা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা ব্যয়কে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

আইএ

Wordbridge School
Link copied!