ঢাকা: দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ডলার সংকট ও উচ্চ সুদের হারের কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি পুরো শিল্প খাত। তার ওপর ব্যাংকের উচ্চ সুদের হারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিনিয়োগ। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পেছনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি তথা শিল্পখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের জিডিপিতে এই খাতের অবদান ৩৭ শতাংশ।
২০৩১ সালের মধ্যে এ খাতের অবদান জিডিপির চল্লিশ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা থাকলেও বাজেটে এর কোন প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্প খাতে ৫১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ কমিয়ে ২ হাজার ৫১০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের বাজেটে ছিল ৩ হাজার ২৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
পুন:মোড়কজাতকরণ শিল্প:
গুড়ো দুধ আমদানির ক্ষেত্রে আড়াই কেজি পর্যন্ত এবং বাল্ক আকারে আমদানির ক্ষেত্রে মোট করভারের পার্থক্য অনেক বেশি থাকায় স্থানীয়ভাবে প্যাকেটকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ ভোক্তার নিটক থেকে অযৌক্তিক পরিমাণ মুনাফা অর্জন করছে। গুড়া দুধের মূল্য যৌক্তিকীকরনের অংশ হিসেবে আড়াই কেজি পর্যন্ত প্যাকেটজাত গুড়া দুধের ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পুরক শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্পের কাচামাল মিথাইল এলকোহল বাল্ক আকারে আমদানী শিল্প ৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এয়ারকন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেট উৎপাদনকারী শিল্প:
রাজস্ব প্রদানে সক্ষমতা বিবেচনার স্বার্থে এয়ারকন্ডিশনার উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত বিভিন্ন প্রকার স্টীল শিট এর আমদানি শুল্ক ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া যেসকল পণ্যে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ তা ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়।
পানি পরিশোধন যন্ত্র উপদানকারী শিল্প:
দেশে বর্তমানে গৃহস্থালীতে ব্যবহারযোগ্য পানি পরিশোধন যন্ত্র উৎপাদিত হচ্ছে। দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার জন্য এই যন্ত্রের আমদানী শুল্ক ১০ হতে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এলইডি ল্যাম্প ও এনার্জি সেভিং ল্যাপ উৎপাদন শিল্প:
এলইডি এবং এনার্জি সেভিং ল্যাম্প উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কৃর্তৃক উপকরণ আমদানি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উপকরণের ওপর প্রযোজ্য আমদানি শুল্প যৌক্তিকীকরণ করে ০ এর পরিবর্তে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়।
সকল স্তরে কর অব্যাহতির সংস্কৃতির অবসানের উদ্যেশ্যে শিল্পের কাচামাল আমদানি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের টেবিল-১ এ ০ হারের পরিবর্তে ১ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক নির্ধারনের সুপারিশ করা হয়। প্রি-ফেব্রিকটেড বিল্ডিং তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরণের পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়।
বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং রেন্টাল পাওয়ার কোম্পানি কর্তৃক প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত প্ল্যান্ট, ইকুইপমেন্ট ও ইরেকশন ম্যাটেরিয়াল আমদানিতে শুল্ক ০ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এটিএম ও সিসি ক্যামের উৎপাদনকারী শিল্পের উপকরণের আমদানী শুল্ক ১ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। জেনারেটর সংযোগন এবং উৎপাদনকারী শিল্পের উপকরণ আমদানি শুল্ক না থাকলেও আগামি বাজেটে ১ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এসআই/আইএ