ঢাকা: বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেছেন, বর্তমানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যয় বৃদ্ধি, কর জিডিপি অনুপাত না বাড়া ও রিজার্ভ ক্ষয় হওয়ার মত অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য বাজেট প্রনয়ন খুবই কঠিন একটা কাজ। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সবচেয়ে গুরুতৃবপূর্ণ বিষয়। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্য রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ যা বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং হবে।
শনিবার (০৮ জুন) বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) প্রস্তাবিত বাজেটের উপর প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
আনোয়ার উল চৌধুরী বলেন, বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রধান লক্ষ বলা হলেও টানা ১৪ মাস ধরে ৯ শতাংশের ওপরে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ প্রস্তাবিত বাজেটে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আমরা বাজেটে বর্তমান শিল্প সমূহকে টিকিয়ে রাখার মত কোন নির্দেশনা দেখতে পাচ্ছি না। দেশের শিল্প খাত বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছে। দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহ তার ৬০-৭০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারনে সব প্রতিষ্ঠানের সেলস ড্রপ করেছে, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে নিয়মিত কিন্তু নিরবিচ্ছিন্ন সেবা পাচ্ছে না শিল্প কারখানায়।
তিনি বলেন, সরকারের সংকোচন নীতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্রাই আপ পলিসির কারনে ব্যাংকে বন্ডে বিনিয়োগের দিকে উৎসাহিত হচ্ছে আবার সরকারও ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে। ব্যাংকের উচ্চ সুদহার এবং তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিচ্ছে। নতুন বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে। এবছর প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬.৬ শতাংশ। বেকারত্বের বদ্ধি পাচ্ছে। নতুন করে প্রায় ১ লক্ষ বিশ হাজার বেকার হয়েছে। এর ফলে বর্তমান শিল্প সমূহ কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেড়ে যাচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না।
বিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে গেলে আমদানি বিকল্প শিল্প এবং কিভাবে কারখানাগুলোর সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার দিকে লক্ষ রাখতে হবে প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোন দিকনির্দেশনা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আবার রপ্তানি খাতে ইপিবির তথ্য অনুসারে দেখা যাচ্ছে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক ও কাস্টমসের তথ্যে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে না। বিজিএমইএ ও বিকেএমই এর তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় রপ্তানি খাতের অবস্থা আশানূরূপ নয়।
অন্যদিকে ইপিজেড এর শিল্পে কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানির ক্ষেত্রে ১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। একদিকে রপ্তানি আশানুরুপ বৃদ্ধি পাচ্ছে না, রেমিটেন্সের প্রবাহ কম, রিজার্ভের স্বল্পতার মধ্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত অর্থনীতিকে আরো চাপে ফেলবে। আমরা এ প্রস্তাব পূনর্ববেচনার দাবি জানাচ্ছি, দিকনির্দেশনা আশা করেছিলাম এ বাজেটে। বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পের সাথে দেশের মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পের প্রবৃদ্ধি নির্ভর করে। এমন পরিস্থিতিতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প খাত। প্রস্তাবিত বাজেটে মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পের টিকিয়ে রাখার কোন দিকনির্দেশনা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
আইএ