ঢাকা: মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করতে এ খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও আস্থা তৈরি দরকার বলে জানান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।
বিএসইসির উদ্যোগে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের পুঁজিবাজারে কর্মরত অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণে ‘অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির জন্য সততা এবং কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে সেমিনার (Seminer on Integrity and Compliance Issues for the Asset Management Companies)’ শীর্ষক একটি কর্মশালা তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল শনিবার গাজীপুরে অবস্থিত ব্র্যাক সিডিএম এর কনফারেন্স হলে বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত উক্ত কর্মশালায় দেশের অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিএসইসির সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী মিউচুয়াল ফান্ড সংশ্লিষ্টদের স্বাগত জানান এবং এই খাতে সুশাসন নিশ্চিতে একত্রে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করতে এ খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও আস্থা তৈরি দরকার বলে জানান। মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতকে আরো বিকশিত করতে এ খাত সম্পর্কে সকলকে আরো সমন্নিত উদ্যোগে কাজ করা প্রয়োজন বলে জানান।
তিনি কপ্লায়েন্স রিপোর্টিংকে আরো সহজতর ও কার্যকর রূপ দেয়ার কথা বলেন। অংশীজনদের মতামত সহকারে পরিবর্তিত মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিধিমালা তৈরি হয়ে গেছে এবং অতি শীঘ্রই এটি হতে যাচ্ছে বলে জানান। শুদ্ধচার ও কমপ্লায়েন্সসহ আরো সবক্ষেত্রে ভালো ফলাফল আনার জন্য খাত সংশ্লিষ্টদের সাথে আরো সংযোগ প্রয়োজন বলে জানান তিনি। তিনি মিউচুয়াল ফান্ড খাতকে আরো শক্তিশালী রূপ প্রদান ও এই খাত যেন দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তা নিশ্চিত করার প্রত্যাশার কথা জানান এবং বিএসইসি এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সবধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানান।
উক্ত কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। অনুষ্ঠিত কর্মশালার বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির উন্নয়নের জন্য এই খাতে সুশাসন নিশ্চিতে সকল অংশীজনদের একসাথে টিম হিসেবে কাজ করার উপর জোর দেন এবং কোঅর্ডিনেশনের মাধ্যমে আরো ভালো কাজ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অর্থনীতি, পুঁজিবাজার এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মিউচ্যুয়াল ফান্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে পারলে এবং এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে পারলে, এই খাতকে বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে জানান তিনি। তিনি কর্মশালঅ অনুষ্ঠানে আগত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ব্যাপ্তি আরো বাড়বে এবং দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এছাড়াও উক্ত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক এবং বিএসইসির জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।
তিনি কর্মশালায় আগত সকলকে কমিশন সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহণ এবং এ বিষয়টিকে আরো গতিশীল করায় মতামত ও পরামর্শ প্রদান করার করা বলেন। তিনি জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কমিশনের নানা উদ্যোগ ও ক্রিয়াকলাপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি শুদ্ধাচারের স্পিরিট বা উদ্দীপনার আলোকে সুশাসন নিশ্চিতে সকলকে কাজ করার অনুরোধ জানান।
উক্ত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সংক্রান্ত ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা ও যুগ্মসচিব বদরে মুনির ফেরদৌস। তিনি সরকারের জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনার নানাদিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলটির অনুসরণ ও বাস্তবায়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে জনগন ও জাতির পিতার স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠায় কার্যকর অবদান রাখবে।
এছাড়াও কর্মশালায় ‘Compliance Issues for the Asset Management Companies’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোল্লাহ মোঃ মিরাজ-উস-সুন্নাহ। তিনি কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট আইনও বিধির আলোকে নিবন্ধিত মিউচুয়্যাল ফান্ডসমূহ কর্তৃক পালনীয় বিষয়সমূহ তুলে ধরেন।
এমএস