ঢাকা : দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি-মার্চ সময়কালে বা প্রথম প্রান্তিকের পারফরম্যান্স তালিকায় যমুনা ব্যাংক শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক এবং তৃতীয় স্থানে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক।
এর পরের অবস্থানে যথাক্রমে প্রাইম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংক।
দেশের শীর্ষ ব্রোকার হাউজ ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৪টি ব্যাংকের নির্দিষ্ট ১০টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে এই র্যাঙ্কিংটি তৈরি করেছে।
প্রধান মানদণ্ডগুলো হল- শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস), শেয়ার প্রতি নেট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস), খরচ-থেকে-আয় অনুপাত যা অপারেটিং দক্ষতা প্রকাশ করে, ইক্যুইটিতে রিটার্ন (আরওই), সম্পদের উপর রিটার্ন, স্প্রেড, নেট সুদের মার্জিন, অ-পারফর্মিং লোন (NPL) অনুপাত, এবং লভ্যাংশ।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত "ব্যাংক সেক্টর পারফরম্যান্স অ্যান্ড আর্নিংস আপডেট ২০২৩ এবং প্রথম প্রান্তিক-২০২৪ শিরোনামের প্রতিবেদন অনুসারে, যমুনা ব্যাংক ১০০ এর মধ্যে ৭৫.৪৬ পয়েন্ট নিয়ে সর্বোচ্চ স্কোর করেছে। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির অবস্থান ছিল ১১তম।
কিন্তু ২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে যমুনা ব্যাংকের মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৬৪.২০ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ১৩৩.৩১ কোটি টাকা ছিল। ব্যাংকটি এই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছির ১.৮৬ টাকা, এনএভিপিএস ছিল ২৪.৫২ টাকা। এছাড়া শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (NOCFPS) ছিল ১৮.৯৯ টাকা।
যমুনা ব্যাংক বলছে, আগের বছরের তুলনায় নিট সুদ, বিনিয়োগ এবং কমিশন আয় বৃদ্ধির কারণে প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস বেড়েছে। অপারেটিং কার্যক্রম এবং গ্রাহকের আমানত থেকে নগদ প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। এছাড়াও ধরে রাখা আয় বৃদ্ধির কারণে আগের বছরের তুলনায় নেট এ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) বেড়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংক ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সার্বিক রেটিংয়ে ৬৮.২৩ পয়েন্ট অর্জন করেছে।
ব্যাংকটি ২০২৪ সালের জানুয়ারী-মার্চ অর্থাৎ প্রথম প্রান্তিকে ৬ শতাংশের সর্বোচ্চ নেট সুদের মার্জিন রেকর্ড করেছে।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৬৭ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। গত বছরের র্যাঙ্কিংয়ে পঞ্চম স্থানে ছিল ব্যাংকটি।
পর্যালোচনা অনুসারে, চতুর্থ সেরা সাফল্য দেখিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। সার্বিক বিবেচনায় ব্যাংকটি ৬৬.৬৫ রেটিং পেয়েছে। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির অবস্থান ছিল ১০তম।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারফরম্যান্স তালিকায় ৬৫.৫৬ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। গত বছর ব্যাংকটির অবস্থান ছিল ১৬তম।
এছাড়াও ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৬৫.১২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক ষষ্ঠ স্থানে। এর পর ধারাবাহিকভাবে পূবালী ব্যাংক ৬৪.১৫ পয়েন্ট, ইস্টার্ন ব্যাংক ৫৯.৪৬, উত্তরা ব্যাংক ৫৯.১৯ এবং সিটি ব্যাংক ৫৭.৪৯ পয়েন্ট অর্জন করেছে।
তবে, প্রথম প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের কর-পরবর্তী সর্বোচ্চ নিট মুনাফা ছিল ২৭৩ কোটি টাকা, তারপরে পূবালী ব্যাংকের ১৭৮ কোটি টাকা এবং যমুনা ব্যাংকের ১৬৪ কোটি টাকা।
এদিকে ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে, যমুনা, ব্র্যাক এবং পূবালী ব্যাংকে ইপিএস সব চেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল। তারা যথাক্রমে ১.৮৬, ১.৫৪ এবং ১.৫৪ টাকা ইপিএসের রেকর্ড করেছে।
এই সময়ের মধ্যে, পূবালী ব্যাংক নিট সুদের আয় ১৪৭ শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড করেছে, তারপরে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৮৭ শতাংশ এবং সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ৭৭ শতাংশ।
ইবিএল সিকিউরিটিজ পর্যালোচনা অনুসারে, অর্থনীতিতে ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির চাপ থাকা সত্ত্বেও আমানতের উপর উচ্চতর রিটার্নের কারণে ব্যাংকিং সেক্টরের আমানত সঞ্চালন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং সেক্টরে ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে মোট আমানত অন্যান্য বছরের তুলনায় ১০.৮ শতাংশ এবং ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এমটিআই