ঢাকা : পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারিসহ নানান অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।
একইসাথে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান সমূহের কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোন অনিয়ম হয়েছে কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক মো. মাহমুদুল হক স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এ তথ্য জানা গেছে।
সালমান এফ রহমান ও এস আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। নিয়োগকৃত কর্মকর্তারা হলেন- বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মাদ আবুল হাসান, অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক অমিত কুমার সাহা এবং তৌহিদুল ইসলাম সাদ্দাম। অনুসন্ধান কমিটিকে আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘একটি জাতীয় পত্রিকায় গত ১৪ আগস্ট তারিখে প্রকাশিত এস আলম গ্রুপ এবং সালমান এফ রহমানের অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমেছে বিএসইসি।’
‘প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সালমান এফ রহমান আশির দশক থেকেই শীর্ষস্থানীয় একজন ঋণখেলাপি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে তার নাম এসেছিল। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ সুবিধা নিয়ে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটায়। ২০১১ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানের ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘এক সময়ের দেশের শীর্ষ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিকে ২০১৭ সালে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সদ্য বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ। এরপর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশ। ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা।’
সংবাদে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে। ফলে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।’
এএইচ/আইএ