• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সাপ্তাহিক বাজারদর

ফের বেড়েছে সবজি-মুরগি-ডিমের দাম, অজুহাত বৃষ্টি


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
ফের বেড়েছে সবজি-মুরগি-ডিমের দাম, অজুহাত বৃষ্টি

ঢাকা: বৃষ্টির অজুহাতে সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীতে বেশির ভাগ সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। একইসঙ্গে বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, গত কদিনের টানা বৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে সরবরাহব্যবস্থা। এতেই সব নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে নিত্যপণ্য ঢাকায় ঠিকমতো আসতে পারেনি। ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সবজির দাম বেড়েছে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

গত কদিনের টানা বৃষ্টিতে লাগামছাড়া রাজধানীর সবজির বাজার। হাতেগোনা দু-একটি ছাড়া কেজিপ্রতি ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম। বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৮০-১০০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, লতি ৬০-৮০ টাকা ও পটোল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ২৫-৩০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, শিম ২৫০-৩০০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়, আর প্রতি পিস ফুলকপি ৭০ টাকা ও প্রতি পিস লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। বাজারে লালশাকের আঁটি ২০ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ২০ টাকা, ডাঁটাশাক ২০ টাকা, কলমিশাক ১০-১৫ টাকা ও পালংশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচামরিচের দাম ওঠানামা করছে। গত সপ্তাহে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া কাঁচামরিচের দাম নেমে এসেছিল ১৬০-১৮০ টাকায়। এ সপ্তাহে সেটি আবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২০-২৪০ টাকায়।

তবে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই মাছের দামে। বেশিরভাগ মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৩৮০ টাকায়। এছাড়া, চাষের পাঙাশ প্রতি কেজি ২০০-২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০-২৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০-৬০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ টাকা, আইড় ৭৫০-৮০০ টাকা ও পাবদা ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি হারে ২২০০-২৩০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ১৭০০-১৮০০। আর ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিতে ১৫০০-১৬০০ টাকা ও ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য কেজিতে গুনতে হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে, সরকার ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেয়ার পর আরও চড়েছে বাজার। বিক্রেতারা বলছেন, দাম নির্ধারণের আগে বাজারে কম দামেই বিক্রি হয়েছে ডিম ও মুরগি। কিন্তু দাম বেঁধে দেয়ার পর খামারিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এর প্রভাবে বাজারও চড়া।

পাইকারি বাজারে ফার্মের বাদামি রঙের ডিম ১৬০ টাকা ডজন বিক্রি হলেও মহল্লার দোকানে লাগছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা।  আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতমাসে সরকার পতনের পর নিত্যপণ্যের দাম কমে অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে এসেছিল। তবে গত তিন সপ্তাহে আবারও বেড়ে তা আগের অবস্থানে গেছে। আজ ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ ও সোনালি মুরগি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সাদা লেয়ার ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়, জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।
 
অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়।

বাজারে বেড়ে গেছে আদা-রসুনের দামও। প্রতি কেজিতে ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২৬০ টাকা ও মানভেদে আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৮০ টাকায়।
 
আর পাইকারিতে কেজিতে ২-৩ টাকা দাম কমলেও বড় সুখবর নেই খুচরা পেঁয়াজের বাজারে। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে মাত্র আসতে শুরু করেছে ভারতীয় পেঁয়াজ। তবে চাহিদা তেমন একটা নেই। মানুষ দেশি পেঁয়াজের দিকেই বেশি ঝুঁকছে। তাই দামে এখনও তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। তবে সামনে দাম কমবে।

পেঁয়াজ রপ্তানির শর্ত ভারত প্রত্যাহার করলেও, বাজারে তার প্রভাব তেমন পড়েনি। কয়েকটি দোকানে কিছুটা কমে বিক্রি হলেও বেশিরভাগ দোকানেই বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। এছাড়া, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৯৫-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিয়ন্ত্রণে আসেনি চালের বাজারও। বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই চড়া চালের দাম। বর্তমানে প্রতিকেজি মোটা চাল (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) ৫০-৫৫ ও মাঝারি (বিআর-২৮ ও পাইজাম) ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  মানভেদে মিনিকেট ৭১-৭২ টাকা, আটাশ চাল ৫৭-৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকা, পাইজাম ৫৬-৬০ টাকা, সুগন্ধী চিনিগুঁড়া পোলাওর চাল ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!