ঢাকা : দেশে চলমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকের প্রতি বাড়ছে অনাস্থা। পাশাপাশি লেনদেনে সফল মোবাইল ব্যাংকিং। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে। আলোচ্য মাসে এমএফএসে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। জুলাইয়ে এমএফএসে লেনদেন হয়েছিলো ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা।
তবে আগস্ট মাসে গ্রাহক সংখ্যা ২৩ কোটি ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৫ থেকে কমে ২৩ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৩৪৭-এ নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যা ছিল একক মাসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি। এর আগে কখনোই এক মাসে এত টাকা লেনদেন হয়নি। এর আগে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল গত মার্চ মাসে।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা; নভেম্বরে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। তার আগের মাস অক্টোবরে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে– ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে। এরপর থেকে প্রতি মাসেই লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যা কিছুটা কমেছে। জুলাইয়ে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৫। আগস্টে তা কমে ২৩ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৩৪৭ এ দাঁড়িয়েছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়।
বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ।পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। তবে খুব সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের নগদও দিচ্ছে এই সেবা।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :