ঢাকা : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বন্ড ইস্যুর প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটির পর্ষদ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চেয়েছিল। যাতে ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির অনুমোদনও নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সাবস্ক্রিপশনের জন্য দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় বন্ডটির আবেদন বাতিল করে দিয়েছে বিএসইসি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি।
তথ্য অনুসারে, ‘এআইএল কনভার্ট্যাবল বন্ড’ নামের ৩০০ কোটি টাকার এই বন্ড ইস্যুর প্রস্তাবে ২০২২ সালের ২৬মে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় অনুমোদন পায় আলিফ ইন্ডাষ্ট্রিজ। এ বন্ডে সাবস্ক্রিপশনের জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর সময় বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রথমবার আবেদন করলে কোম্পানিকে ২০২৩ সালের ২৫মে পর্যন্ত সময় দেয় বিএসইসি।
পরবর্তীতে ওই সময়ের মধ্যেও কাঙ্খিত আবেদন জমা না পরায় দ্বিতীয় দফায় আরো ৬মাস সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সাবস্ক্রিপশনের জন্য সুযোগ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু দ্বিতীয় দফার সময়ের মধ্যেও কাঙ্খিত সাবস্ক্রিপশন না হওয়ায় তৃতীয় দফায় আরো ৯ মাস সময় পায় আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। ওই সময় শেষ হওয়ার পর গত ৮ অক্টোবর বিএসইসির কাছে পুনরায় সময় বাড়ানোর আবেদন জানায় কোম্পানিটি। এ দফায় কোম্পানির আবেদন বাতিল করে দিয়েছে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নের্তৃত্বাধীন কমিশন।
এর আগে গত সেপ্টম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কোম্পানিটির মূলধন বাড়াতে নতুন শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব বাতিল করে দেয় বিএসইসি। উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহের শর্তপূরণ করতে না পারায় এ আবেদন বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয় বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে।
জানা যায়, কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে নতুন করে শেয়ার ইস্যু করে মূলধন সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে কোম্পানিটি। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল কোম্পানিকে এই প্রক্রিয়ায় মূলধন বৃদ্ধির অনুমোদনও দেয় বিএসইসির বিগত কমিশন। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাদের বর্তমান উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বিপরীতে প্রায় ৯ কোটি ৯০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে ২০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের অনুমোদন পায়। নতুন করে সংগ্রহ করা এই অর্থ ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু কোম্পানির সেই প্রস্তাব খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর বাতিল করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানির বাজারমূল্যের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ মূল্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে নতুন শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেয় বিএসইসির বিগত কমিশন। গত ৮ এপ্রিল যেদিন বিএসইসির পক্ষ থেকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়, সেদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১১০ টাকার বেশি। অথচ কোম্পানির উদ্যোক্তারা মাত্র ২২ টাকায় নিজেদের মধ্যে নতুন শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন পায়, যার মধ্যে ১০ টাকা অভিহিত মূল্য আর ১২ টাকা অধিমূল্য বা প্রিমিয়াম। নতুন শেয়ার ছেড়ে মূলধন বৃদ্ধির অনুমোদন–সংক্রান্ত চিঠিতে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে এই অর্থ জমা দিতে বলা হয় উদ্যোক্তাদের। কিন্তু সেই শর্ত পালনে ব্যর্থ হয় কোম্পানিটি। তিন মাসের মধ্যে অর্থ জমা না দিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করে কোম্পানিটি। এ অবস্থায় বিএসইসির নতুন কমিশন কোম্পানিটির সময় বৃদ্ধির আবেদন নামঞ্জুর করার পাশাপাশি কম দামে উদ্যোক্তাদের মধ্যে শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাবটিও বাতিল করে দেয়।
এমটিআই