• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বীমা খাতের স্থবিরতা কাটছে না, ব্যবসা মন্দায় কোম্পানিগুলো


আবদুল হাকিম নভেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম
বীমা খাতের স্থবিরতা কাটছে না, ব্যবসা মন্দায় কোম্পানিগুলো

ঢাকা: দীর্ঘদিনের ব্যবসা মন্দা কেটে উঠতে পারছে না বীমা খাত। সরকার পরিবর্তন কিংবা অন্য যেকোন কিছুর প্রভাব যেন চেপে বসে এই খাতে। দেশের বীমা গ্রাহকদের বেশির ভাগ নিম্মবিত্ত মানুষ। জীবিকা নির্বাহ যেখানে কঠিন সেখানে টাকা জমানোর সুযোগ কোথায়? অনেক কোম্পানি তাদের ব্যয় সংকোচন করেও পারছে না। সার্বিক ব্যবসায় এক প্রকার স্থবিরতা বিরাজ করছে।

এদিকে দেশের বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চার সদস্যের পদত্যাগের পর কার্যত স্থবির হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমও। এছাড়াও চেয়ারম্যান নিয়োগের পর দীর্ঘদিন অসুস্থতার কারনে অফিস না করায় থমথমে বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানটিতে। দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সংস্কার কাজ দ্রুত হয়ে সাফল্যের দিকে আগালেও, বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাই এখনো গোছাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এরফলে অচলাবস্থা বিরাজ করছে পুরো বীমা খাতে।

তবে নতুন চার সদস্যের নিয়োগের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানা গেলেও, কবে নাগাদ নিয়োগ হবে তা নিশ্চিত করে বলছে না নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেনি। এতে অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে।

আইডিআরএ’র একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চার সদস্যের পদত্যাগের পর বলতে গেলে কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। ছোট ছোট কাজগুলো হলেও ডিসিশনের অভাবে বড় কাজ আটকে আছে।

জানা গেছে, গত ৭ নভেম্বর আইডিআরএ’র চার সদস্য বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য খোকন (প্রশাসন), মো. দলিল উদ্দিন (আইন), মো. নজরুল ইসলাম (নন-লাইফ) এবং কামরুল হাসান (লাইফ) পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে পদগুলো ফাঁকা রয়েছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। দায়িত্ব নিয়েই অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেয়। আর্থিক খাতের সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং আইডিআরএ চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়। এ ছাড়া আর্থিক খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে। তার অংশ হিসেবে আইডিআরএ’র চার সদস্যকে পদত্যাগের ‘পরামর্শ’ দেওয়া হয়।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংস্কারের অংশ হিসেবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা বা সরিয়ে দেওয়া খুবই সহজ সমাধান হলেও পদগুলো ফাঁকা থাকায় কী কী অসুবিধা হতে পারে তা আগে থেকে ভেবে দেখার দরকার ছিলো।

বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ না করার শর্তে আইডিআরএ’র ঊর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারের উচিত ছিলো নতুন চার সদস্য ঠিক করে তাদের পদত্যাগ করতে বলা। চার সদস্যের পদত্যাগ পুরো বীমা খাতে যে সমস্যা হতে পারে তা চিন্তা না করেই তাদের পদত্যাগ বাধ্য করা হয়েছে।

একটি জীবন বীমা প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সোনালীনিউজকে বলেন, দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সংস্কার কাজ হলেও আইডিআরএ’র কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। একদিকে দুর্নীতিগ্রস্ত মেম্বারদের সরাতে সময় নিয়েছে অনেক। অন্যদিকে এখানো কোন নতুন মেম্বার না দেওয়ায় কাজের অগ্রগতি থেমে আছে। এর থেকে দ্রুত উত্তোরণ প্রয়োজন। নয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই খাতের সবাই। আইডিআরএকে তার স্বাধীন সত্তা নিয়ে কাজ করতে হবে। নয়তো এই পরিবর্তন কোন কাজে আসবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, আইডিআরএ’র সদসদ্যের চারটি পদ ফাঁকা থাকায় কাজের গতি কমলেও সরকার এবার সদস্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ বিচার-বিশ্লেষণ ও যাচাই-বাছাই করছে। ফলে কিছুটা দেরি হচ্ছে।

জানা যায়, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের পর চূড়ান্ত নিয়োগ হলেও এবার হয়তো তেমন কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ নাও করা হতে পারে। যোগ্য ব্যক্তিদের সরকার সরাসরি নিয়োগ দিতে পারে।

এএইচ/এসএস

Wordbridge School
Link copied!