ঢাকা : আন্তর্জাতিক ঋণমাণ নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিসের মতে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পরিবর্তনের ফলে নিম্ন প্রবৃদ্ধি তারল্যের ঝুঁকি ও ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এর ফলে ঘাটতি পূরণের জন্য বাংলাদেশকে স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল করছে।
গত সোমবার মুডিস রেটিংসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়াও বিশ্বের ঋণমান যাচাইকারী এ সংস্থাটি সরকারের ইস্যুয়ার ও সিনিয়র আনসিকিউরড রেটিংস ‘বি১’ থেকে ‘বি২’-এ নামিয়ে আনে। একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির পূর্বাভাসকে ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘ঋণাত্মক’ করেছে সংস্থাটি।
তবে মুডিসের বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানো যথাযথ হয়নি বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা বলেছে, গণ–অভ্যুত্থানের পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছে, তা মুডিস রেটিংসে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, পরিবর্তন সম্পর্কে মুডি যে রেটিং করেছে তা গাড়ি সামনে চলার সময় ‘রিয়ারভিউ মিরর দিয়ে দেখার’ শামিল।
বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ছাত্র নেতৃত্বাধীন আন্দোলন ও ব্যাপক জনসমর্থনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০২৪ সালের জুলাইয়ে একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে। সরকার এরই মধ্যে নানা কর্মকৌশল হাতে নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের ইতিবাচক ফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে। রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সমর্থন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াবে।
দ্রুত ঢাকা সফর করে মুডিসের কর্মকর্তারা সার্বিক দিক মূল্যায়ন করবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার পরই সরকারের নেওয়া নীতি ও উন্নয়নের সঠিক মূল্যায়নে সক্ষম হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কোনো পদ্ধতিগত ঝুঁকি নেই এবং কোনো সংক্রামক প্রভাবও থাকবে না। ব্যাংকিং খাতে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে উদ্ভূত সংকটের ঝুঁকি অনেকাংশে প্রশমিত হয়েছে।
বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের সূচকগুলো এখনও লক্ষণীয় উন্নতি প্রদর্শন না করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক অদূর ভবিষ্যতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করছে।
এমটিআই