• ঢাকা
  • সোমবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কসমেটিকস ও সাবান শিল্পে নিম্নতম মজুরি ৯৫০০ টাকা


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১, ২০২৪, ০৫:৪৫ পিএম
কসমেটিকস ও সাবান শিল্পে নিম্নতম মজুরি ৯৫০০ টাকা

ঢাকা: কসমেটিকস ও সাবান শিল্প খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য নতুন নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করেছে সরকার। এতে বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত কারখানার শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা এবং জেলা শহর ও অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত কারখানায় এ মজুরি হবে ৯ হাজার ৫০০ টাকা।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে এ খাতের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল। তখন বিভাগীয় ও সিটি করপোরেশন এলাকার সাবান-কসমেটিকস কারখানায় শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ছিল ৫ হাজার ৯৫০ টাকা এবং জেলা শহর ও অন্যান্য এলাকায় এ মজুরি ছিল ৫ হাজার ৬৪০ টাকা। সে হিসাবে নতুন কাঠামোতে বিভাগীয় ও সিটি করপোরেশন এলাকায় শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে ৪ হাজার ৫০ টাকা এবং জেলা পর্যায়ে বেড়েছে ৩ হাজার ৮৬০ টাকা। উভয় ক্ষেত্রেই মজুরি বেড়েছে ৬৮ শতাংশ।

গত ১৮ নভেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ অনুযায়ী ‘সোপ ও কসমেটিকস’ শিল্প খাতের শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, গ্রেড ও এলাকাভেদে সাবান ও কসমেটিকস শিল্প খাতে সর্বনিম্ন মজুরি হবে ৯ হাজার ৫০০ টাকা আর সর্বোচ্চ মজুরি ১৪ হাজার ৮৯০ টাকা। মোট চারটি গ্রেডে সাবান ও কসমেটিকস শ্রমিকদের জন্য এই মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রেডে মজুরির ক্ষেত্রে বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকা এবং জেলা ও অন্যান্য এলাকা, এই দুই শ্রেণিতে মজুরি ধরা হয়েছে।

দুই শ্রেণিতেই শ্রমিকদের জন্য মূল মজুরি, চিকিৎসা ও যাতায়াতের ভাতা সমান রাখা হয়েছে। তবে বাড়িভাড়ার ক্ষেত্রে ভাতায় পার্থক্য রয়েছে। শ্রমিকদের জন্য চিকিৎসার ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা ও যাতায়াতের ভাড়া ১ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।

সাবান ও কসমেটিকস শিল্পের মজুরিকাঠামোতে সর্বোচ্চ বা প্রথম গ্রেডে আছেন উচ্চতর দক্ষ শ্রমিকেরা। ফোরম্যান, মাস্টার টেকনিশিয়ান, ওয়েল্ডার, মেশিনম্যান, বয়লার অ্যাটেনডেন্ট, বৈদ্যুতিক মিস্ত্রিসহ ১৯ ধরনের শ্রমিক। বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় এই গ্রেডের শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৯০ টাকা এবং জেলা পর্যায়ে ১৪ হাজার ৬৪ টাকা। ২০১৭ সালে এই গ্রেডে মজুরি ছিল যথাক্রমে ৯ হাজার ২৫০ টাকা (বিভাগে) ও ৮ হাজার ৭২০ টাকা (জেলায়)।

মজুরিকাঠামোতে দ্বিতীয় গ্রেডে রয়েছেন সহকারী অপারেটর, সহকারী মেকানিক, বয়লার হেলপার, কার্পেন্টারসহ ১৭ ধরনের ‘দক্ষ শ্রমিক’। তাঁদের জন্য (বিভাগীয় পর্যায়ে) নিম্নতম মজুরি ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৮৫ টাকা। তৃতীয় গ্রেডে আছেন ১১ ধরনের আধা দক্ষ শ্রমিক, যাঁদের নিম্নতম মজুরি (বিভাগে) ১০ হাজার ৭৯৫ টাকা। আর চতুর্থ গ্রেডে থাকা অদক্ষ সাধারণ শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি (বিভাগে) ধরা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।

আগের মজুরিকাঠামোয় অর্থাৎ ২০১৭ সালে বিভাগীয় ও সিটি করপোরেশন এলাকায় দ্বিতীয় গ্রেডে ৭ হাজার ৪৫০ টাকা, তৃতীয় গ্রেডে ৬ হাজার ৫৫০ টাকা ও চতুর্থ গ্রেডে ৫ হাজার ৯৫০ টাকা মজুরি ছিল। এ ছাড়া শিক্ষানবিশ শ্রমিকের ক্ষেত্রে এবার নিম্নতম মজুরি ৭ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৪ হাজার ৮০০ টাকা। এ খাতে শ্রমিকের শিক্ষানবিশকাল ধরা হয়েছে তিন মাস।

প্রজ্ঞাপনে সাবান ও কসমেটিকস শিল্পের শ্রমিকের পাশাপাশি কর্মচারীদের নিম্নতম মজুরিও ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মচারীদের ক্ষেত্রে মোট তিনটি গ্রেড রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন বা তৃতীয় গ্রেডে রয়েছেন পিয়ন, দারোয়ান, নৈশপ্রহরী, মালি, কুক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী। বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় তাঁদের নিম্নতম মজুরি ১০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় গ্রেডে এ মজুরি ১২ হাজার ৩২৫ টাকা ও প্রথম গ্রেডের কর্মচারীদের বিভাগীয় পর্যায়ে নিম্নতম মজুরি ঠিক করা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৭০ টাকা। কর্মচারীর ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশকাল ছয় মাস। শিক্ষানবিশকালে নিম্নতম মজুরি ঠিক করা হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ টাকা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শ্রমিক-কর্মচারীরা বর্তমানে যে গ্রেডে কর্মরত আছেন, সেই গ্রেড অনুসারে তাঁদের নতুন মজুরিকাঠামোর সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। কোনো শ্রমিককে নিম্নতম মজুরির চেয়ে কম মজুরি দেওয়া যাবে না। আবার কেউ ইতিমধ্যে নিম্নতম মজুরির চেয়ে বেশি মজুরি পেলে তাঁর মজুরি কর্তন করা যাবে না। এ ছাড়া নিম্নতম মজুরির প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর থেকে প্রতিবছর মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে।

এএইচ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!