• ঢাকা
  • শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১

দেশে মধুর বাজার ১৫০০ কোটি টাকার


নিজস্ব প্রতিবেদক:  ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ০৬:০৪ পিএম
দেশে মধুর বাজার ১৫০০ কোটি টাকার

ঢাকা: সচেতনতা বৃদ্ধি, সমাজে প্রচলিত মধু বিষয়ক ভুল ধারণা দূরীকরণ; গবেষক, চাষি, উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার সেতুবন্ধন ও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো পঞ্চম জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন।

মৌমাছি ও মধু জোটের আয়োজনে ও গৃহস্থালি খাদ্য উৎপন্নকারী প্রতিষ্ঠান ‘ঘরের বাজার’র পৃষ্ঠপোষকতায় শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইনস্টিউটশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি)-এ এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে এখন প্রতিনিয়তই মধুর চাহিদা ও বাজার বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে মধুর বার্ষিক বাজারমূল্য আনুমানিক ১২০০-১৫০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছে ২০-২৫ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে অবশ্য চাষের মধু ৯০-৯৫ ভাগ। বাকিটা প্রাকৃতিক। এখন অনেকেই মধু বিদেশেও রপ্তানি করছেন। তবে দেশে এখনো মধু পক্রিয়াজাতকরণে এবং সংগ্রহে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা কম। কিছু উদ্যোক্তা সেগুলো নিয়েও কাজ করছেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলন উদ্বোধন করেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএসআরআই) মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনার নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. মোকলেছুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজন থেকে দেশে মৌমাছি চাষ ও মধু নিয়ে কাজ করায় আট ব্যক্তিকে মৌ পদক দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। সম্মাননাপ্রপ্তরা হলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান অ্যাগ্রিকালচারাল ইউনিভাসিটির ডিপার্টমেন্ট অব এন্টোমলজির প্রফেসর ড. আহসানুল হক স্বপন; শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন; বিসিকের মৌ চাষ প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান; বিসিকের মহাব্যবস্থাপক (অবসরপ্রাপ্ত) মো: আলী আশরাফ খান ও জগদীশ চন্দ্র সাহা, সাতক্ষীরার প্রবীণ মৌ পালক মো. আইয়ুব আলি গাজী, সিরাজগঞ্জের প্রবীণ মৌ পালক মো. চাঁন মিয়া সরকার এবং টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মহসিন হোসেন।

পঞ্চম জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন নিয়ে ঘরের বাজারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামশেদ মজুমদার বলেন, এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মধু গবেষক, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি মৌ চাষি ও মৌয়ালদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের মধু শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ এবং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা এবং এই শিল্পের উন্নয়নকে উৎসাহিত করা। বাংলাদেশের মধু শিল্পের উন্নয়ন, বিপণন এবং বৈশ্বিক বাজারে এর অবস্থান তৈরির লক্ষ্যে আয়োজিত এই সম্মেলনে ‘ঘরের বাজার’ নিজেদের অবদান ও আগ্রহ তুলে ধরেছে, যা মধু উৎপাদনকারীদের জন্য নতুন ব্যবসায়িক সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে।

‘ঘরের বাজার’-এর পরিচালক ও সিইও মো. নাজমুস সাকিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তৈরি পোশাক ও মাছের মতো মধুও বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নেবে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও উজ্জ্বল করবে।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন মধু গবেষক সৈয়দ মো. মঈনুল আনোয়ার ও মৌমাছি ও মধু জোটের আহ্বায়ক মো. এবাদুল্লাহ আফজাল। সৈয়দ মো. মঈনুল আনোয়ার বলেন, মৌমাছি ও মধু জোটের মাধ্যমে দেশে মধুর অবস্থান যাতে আরও শক্তিশালী হয়, এই কামনা করছি। আমাদের দেশে মধু খাঁটি নাকি ভেজাল সেটি চেনার জন্য এখনও খুব ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। সেগুলো নিয়েও আমাদের অনেক কাজ করার রয়েছে।

মৌমাছি ও মধু জোটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আহ্বায়ক মো. এবাদুল্লাহ আফজাল জানান, বাংলাদেশের মৌমাছি ও মধু নিয়ে কর্মযজ্ঞের সক্রিয় সকল অংশীদার যেমন মৌয়াল, চাষি, বণিক, গবেষক, উদ্যোক্তা ও ভোক্তাদের একই ময়দানে একীভূত করে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টির দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে ‘মৌমাছি ও মধু’ জোটের যাত্রা শুরু হয়। সবার মাঝে মধু সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা ও সঠিক তথ্য তুলে ধরা এবং দেশবাসীর মাঝে তা ছড়িয়ে দেওয়াও এই জোটের অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমানে জোটে ২৬ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছেন।

আইএ

Wordbridge School
Link copied!