• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

হত্যা মামলার আসামি আব্দুল খালেক থেকে শুভেচ্ছা নিলেন আইডিআরএ’র সদস্যরা


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ১০:২১ পিএম
হত্যা মামলার আসামি আব্দুল খালেক থেকে শুভেচ্ছা নিলেন আইডিআরএ’র সদস্যরা

ঢাকা: দেশে গণঅভ্যুত্থানে স্বাধীন হয়েছে যাদের হাত ধরে তাদের হত্যায় অভিযুক্ত ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আব্দুল খালেক মিয়া আইডিআরএ'র সদস্যদের জানিয়েছেন ফুলেল শুভেচ্ছা। 

তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকান্ডের ইন্ধন ও অর্থ যোগান দেয়ার অভিযোগে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে ইন্ধন ও অর্থ যোগানদাতা হিসেবে দুটিসহ তার বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা করা হয়েছে। 

ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ খোকনের অন্যতম সহযোগী আব্দুল খালেক মামলার আসামি হওয়ার পর আত্মগোপনে থেকে কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ইতিমধ্যে তিনি স্বপরিবারে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি

জানন যায়, আব্দুল খালেক মিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গাজীপুরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের এক মামলার ৫৪ নং আসামি। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে দায়ের করা হত্যাকাণ্ডের দুটি অভিযোগের একটিতে ২৭ ও আরেকটিতে ৩৮ নং আসামি হিসেবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন করা হয়েছে।

গত ১১ অক্টোবর গাজীপুরের গাছা থানায় শহীদ রায়হান আলীর বাবা মামুন সরদারের দায়ের করা মামলার ৫৪ নং আসামি আব্দুল খালেক। ওই মামলায় আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন ও প্রতিহত করতে হত্যাযজ্ঞ চালাতে অর্থায়ন ও সার্বিক সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। 

আব্দুল খালেকসহ ওই মামলার ১৬৭ জন আসামি সম্পর্কে এজাহারে বলা হয়েছে, “আসামি ক্রমিক নং-২২ হতে ৬২ পর্যন্ত সকলে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার আমলে আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে সিন্ডিকেট বাণিজ্য, ব্যাংকের তহবিল আত্মসাত ও নানাভাবে অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ-বিত্ত ও সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে এবং বিদেশে অর্থ পাচার করে। তারা অবৈধ সরকারের অবৈধ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য যখন যেভাবে প্রয়োজন সেভাবে অর্থ যোগান দিয়ে সর্বমহলে সরকারের অর্থ যোগানদাতা ও শেখ পরিবারের দুর্নীতির বিপুল পরিমাণের অর্থ পাচারে সহায়তাকারী হিসেবে পরিচিত।

“উল্লেখিত নং-২২ হতে ৬২ পর্যন্ত আসামিগণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য আসামি ক্রমিক নং-১ হতে ২১ এবং ৬৩ হতে ১৬৭ এদেরকে বিভিন্নভাবে নগদ অর্থ প্রদান করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য সার্বিক সহায়তা করে। 

উক্ত আসামিগণ বিভিন্ন সময়ে গণভবন, সচিবালয়, পুলিশ সদর দপ্তর ও আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য বল প্রয়োগ পূর্বক গণহত্যা করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।”

এদিকে গত ২৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে দায়ের করা হত্যাকাণ্ডের একটি অভিযোগে ৩৮ নং আসামি হিসেবে আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন করা হয়েছে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে ২০ জুলাই যাত্রাবাড়িতে ছাত্রজনতার ওপর সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহীদ সোহেলের স্ত্রী আয়শা আকতার কুহেলি বাদী হয়ে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই অভিযোগে ২৭ নং আসামি হিসেবে ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধেও আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন করা হয়েছে।

গত ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে দায়ের করা হত্যাকাণ্ডের আরেকটি অভিযোগে ২৭ নং আসামি হিসেবে আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়িতে শহীদ মিরাজ হোসেনের বাবা আঃ রব মিয়া এই অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এই বিষয়ে ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আব্দুল খালেক মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তী তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনও সাড়া দেননি।

পরবর্তীতে ইসলামি ইন্সুইরেন্সের কোম্পানি সেক্রেটারির মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এই প্রতিবেদক। আব্দুল খালেক মিয়া তার ব্যক্তিগতসহকারীকে দিয়ে ফোন দিয়ে এই প্রতিবেদককে জানান স্যার অসুস্থ কি বিষয়ে কথা বলতে চান জানালে স্যারকে অবগত করা হবে এবং স্যার কোনও মেসেজ দিলে আপনাকে জানানো হবে। 

ফুলেল শুভেচ্ছার বিষয়ে জানতে আইডিআরএ'র নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত সদস্য (নন-লাইফ) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিককে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
 
এআর

Wordbridge School
Link copied!