• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১

মৃত্যুশয্যায় থাকা স্ত্রীর পাশে বসেই শিক্ষক শুনলেন চাকরি নেই


সোনালীনিউজ ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০, ১০:২১ পিএম
মৃত্যুশয্যায় থাকা স্ত্রীর পাশে বসেই শিক্ষক শুনলেন চাকরি নেই

ঢাকা: ক্যান্সারে আক্রান্ত মরণাপন্ন স্ত্রীর পাশে বসেই চাকরি হারানোর খবরটি পেলেন অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান।  জানলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাকে। তিনি আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে আজ অনেকটা অসহায় তিনি।  

অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষক সংগঠন সাদা দলের নেতা। ২০১৮ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে তিনি একটি লেখা লেখেন। ওই লেখায় তিনি ইতিহাস বিকৃতি করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর অবমাননা করেছেন এমন অভিযোগ ওঠে। ওই বছর ২ এপ্রিল তাকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। ওই কমিটি অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়।

এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তার মতামত চাওয়া হয় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কাছে। তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পক্ষে মত দেন অ্যাটর্নি জেনারেল। বিষয়টি আরও পর্যালোচনার জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বুধবার সিন্ডিকেটের সভায় ট্রাইব্যুনালের সুপারিশ অনুযায়ী তাকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করেছে ছাত্রলীগ। 

এদিকে নিজের ভুল স্বীকার করে মোর্শেদ হাসান প্রত্যাহার করে নেন লেখা। পাশাপাশি দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনাও করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তাকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তই অনুমোদন করেছে। ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে অধ্যাপক হাসানের এই দণ্ড নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা আলোচনা চলছে। ইতিহাস বিকৃতি অবশ্য কেউই সমর্থন করে না। কিন্তু ভুল স্বীকার ও মানবতার বিষয়টি দেশের গৌরবময় অধ্যায়ে নেতৃত্বে দেওয়া প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করার কথাও বলছেন অনেকে।

এ বিষয়ে আমেরিকার ইলিনয়েস স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রিয়াজ ফেসবুকে লিখেছেন, একদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মতপ্রকাশের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় আইন একজন শিক্ষককে যতটুকু অধিকার দিয়েছে তা কেড়ে নিতে উদ্যত, অন্যদিকে এমনকি তার সহকর্মীরা প্রকারান্তরে বলছেন যে একটা সীমারেখা তারা মানতে রাজি আছেন। এই দুইয়ের কোনোটাই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মৌলিক ভিত্তি এবং ভিন্নমত প্রকাশের জায়গা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে পরিচিতি থাকার কথা তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। 

জনগণের অর্থে পরিচালিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই আচরণ একদিকে দেশে মতপ্রকাশের অবস্থা কি সেটা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, অন্যদিকে নাগরিকের করণীয় কি সেটাও স্মরণ করিয়ে দেয়।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!