ঢাকা: করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চললেও এ মুহূর্তে স্কুল খুলে দিলে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের প্রায় সকল শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী। প্রাথমিকের ৯৭ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ৯৫ দশমিক ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অভিভাবক এমন মতামত দিয়েছেন।
গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্স সেন্টার (পিপিআরসি) এবং বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিজিআইডি) পরিচালিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠেছে।
সোমবার (১০ মে) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠান দুইটি। ২০২০ সালের এপ্রিল এবং চলতি বছরের মার্চে ছয় হাজারের অধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এ সমীক্ষা করা হয়েছে।
মহামারির এ সময়ে মরণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকার পরও সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, স্কুল বন্ধ থাকলেও সন্তানদের বাইরে যাওয়া বন্ধ নেই, শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে কোচিং সেন্টারে পাঠাচ্ছেন তারা।
তাছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার কারণে সন্তানদের শিক্ষায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, যা তারা বাড়াতে চান না। বাধ্য হয়ে এ ক্ষতির কিছুটা কমাতে কোচিং সেন্টারে সন্তানদের পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে নিয়মিত খরচের তুলনায় বর্তমানে শিক্ষায় খরচ ১১-১৩ গুন পর্যন্ত বেড়েছে।
অভিভাবকা জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের সন্তানদের শিক্ষায় আগ্রহ কমছে। আর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ‘অটো পাস’ এর কারণে ভবিষ্যতে চাকরি জীবনে গিয়ে সন্তানরা কোনো সমস্যায় পড়েন কি-না, তা নিয়েও তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন।
এ সমীক্ষা প্রতিবেদন তুলে ধরেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বিজিআইডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।
গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সমীক্ষা প্রতিবেদনের মূল বার্তা হলো- স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রাথমিকের ৫১ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থী কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।
গবেষণায় আরো উঠে এসেছে, শিক্ষায় পিছিয়ে থাকলে ভবিষ্যত জীবনে সন্তান সমস্যায় পড়বে, এমন আশঙ্কা থেকে অতি দরিদ্র ৫৯ শতাংশ বাবা-মা তাদের ছেলেমেয়ের কোচিং সেন্টারে পাঠিয়েছেন। আবার স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে কওমি মাদ্রাসা খোলা থাকায় এখানে ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বেড়েছে।
এ অবস্থায় আগামী বাজেটে প্রাথমিকের শিক্ষার্থী প্রতি মাসিক ৫০০ টাকা করে মোট ২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে পিপিআরসি এবং বিআইজিডি।
সোনালীনিউজ/এমএইচ
আপনার মতামত লিখুন :