• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

স্কুলের প্রধান শিক্ষক এখন চা দোকানদার


গাইবান্ধা প্রতিনিধি: আগস্ট ১৬, ২০২১, ০৪:০৫ পিএম
স্কুলের প্রধান শিক্ষক এখন চা দোকানদার

সংগৃহীত ছবি

গাইবান্ধা: গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী গ্রামের খাইরুল ইসলাম বাদশা। পেশায় শিক্ষক ছিলেন।বর্তমান করোনা পরিস্থির কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় জীবনধারণের জন্য অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন তিনি। চায়ের দোকানই এখন তার আয় রোজগারের মূল উৎস। 

মহামরির কারণে স্কুল বন্ধ হওয়ার পর পাঁচ ছেলে-মেয়ে নিয়ে বিপদে পড়েন বাদশা। সংসারের চাকা বন্ধ হওয়ার যোগাড় হয়েছিল। বাধ্য হয়েই পেশা বদলে ফেললেন। যে আঙিনায় কিছুদিন আগেও কোমলমতি শিশুদের জন্য পাঠশালা গড়েছিলেন, এখন সেখানেই চলছে তার চায়ের দোকান। সময়, পারিপার্শ্বিকতা এবং জীবন পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে তার জীবন চালচিত্র।

আরও পড়ুন: পদোন্নতির আশ্বাসে গুড়েবালি, প্রধান শিক্ষকদের ক্ষোভ

খাইরুল ইসলাম জানান, বাবার জমি বিক্রি করে রেজিয়া মার্কেটের পাশে চার শতক জায়গাটা কেনা ছিল তার। ২০০১ সালে সেখানে গড়ে তোলেন আহমোদিয়া স্কুল অ‌্যান্ড কোচিং সেন্টার। নিয়োগ দেন আরও ১০ জন শিক্ষককে। তিনি ছিলেন প্রধান শিক্ষক। ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াতেন। কিন্তু করোনার কারণে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। অন‌্য শিক্ষকদের বেতন আর দিতে পারছিলেন না। নিজেরও চলতে কষ্ট হচ্ছিলো।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক মারা গেলে সন্তানদের দায়িত্ব নেবে ট্রাস্ট

গিদারী ইউনিয়নের মহসিন আলী নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলটিতে পড়ালেখার মান ভালো ছিলো। এ কারণে অনেক দূর থেকেও ছেলে-মেয়ে আসতো। আমার দুই মেয়েও এই স্কুলে পড়তো। খরচও তুলনামূলক কম ছিলো। কিন্তু এখন স্কুল বন্ধ। তাই মেয়েদের পড়ালেখাও আগের মতো হচ্ছে না।’

আরও পড়ুন: পদোন্নতির তালিকায় মৃত শিক্ষকরাও

স্কুলের শিক্ষিকা হামিদা বেগম বলেন, ‘স্কুলের আয় দিয়ে আমার সংসার ভালোই চলছিলো। সেখানে আরও নয় জন শিক্ষক ছিলেন। সব মিলে আমরা ভালো ছিলাম। করোনা কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এ তো এক দুই মাস না। করোনার কারণে সব থেকে বিপদে পড়েছি আমরা। এখন ধার দেনা করে আর স্বামীর সামান্য আয়ে কোনো মতো সংসার চালিয়ে নিচ্ছি।’

খায়রুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘আর কতো টানা যায়। করোনা ও লকডাউনে আমার সব শেষ। জমি বিক্রি করে শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করে স্কুল বন্ধ করে দিয়েছি। স্কুল ঘরের দুই পাশের বেড়া খুলে চায়ের দোকান খুলে বসেছি। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলছে।’ 

গাইবান্ধা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাফিউল আলম বলেন, ‘করোনার কারণে অসংখ্য স্কুল ও কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। আমার এমন স্কুলের শিক্ষকদের জন‌্য সহায়তার হাত বাড়িয়েও দিচ্ছি।’

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!