ঢাকা : বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) শিক্ষক-কর্মচারীদের সেপ্টেম্বর মাসের এমপিওর চেক ছাড় হয়েছে। আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা নিজ নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারবেন।
সোমবার (৪ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের (স্কুল ও কলেজ) শিক্ষাক-কর্মচারীদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন-ভাতার সরকারি অংশের ৮টি চেক ৪ অক্টোবরে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসমূহের প্রধান কার্যালয়ে (অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী) হস্তান্তর করা হয়েছে।
যেভাবে এমপিওভুক্তির আবেদন করা যাবে : আবারো বেসরকারি স্কুল ও কলেজ এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ১০ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে এমপিওভুক্তির আবেদন করা যাবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (www.shed.gov.bd), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (www.dshe.gov.bd), এবং বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর ওয়েবসাইটে (www.banbeis.gov.bd) ‘অনলাইন এমপিও অ্যাপ্লিকেশন’ শিরোনামে প্রদর্শিত লিংকের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন সরাসরি, ই-মেইল বা পত্রের মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে না।
নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সব কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হবে। এই পদ্ধতিতে নীতিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
এবার এমপিওর নতুন শর্ত, শিক্ষক-কর্মচারীদের উদ্বেগ : এবারের নতুন এমপিও নীতিমালায় শর্ত কঠিন করায় উদ্বেগে রয়েছেন সংশ্নিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমপিওভুক্তির আবেদন নেওয়ার আগে গত মার্চে 'বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিওভুক্তির নীতিমালা-২০২১' চূড়ান্ত করা হয়। নতুন এই নীতিমালা অনুসারে এবারের এমপিও দেওয়া হবে।
এমপিওভুক্তির জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করায় সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষকরা খুশি হলেও নতুন নীতিমালায় এমপিওর শর্ত ‘কঠিন’ করায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় পড়েছেন অন্তত ৯০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় তারা বছরের পর বছর চাতক পাখির মতো চেয়ে রয়েছেন।
'নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, নতুন নীতিমালা শিক্ষকদের গলার ফাঁস হয়েছে। সবচেয়ে কঠিন হয়েছে কলেজ এমপিওভুক্ত হওয়া। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের ক্ষেত্রে আগে তিন গ্রুপ (বিজ্ঞান, ব্যবসায় ও মানবিক) মিলে ৬০ জন শিক্ষার্থী থাকলেই হতো। নতুন নীতিমালায় শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিটি গ্রুপে আলাদা ৬০ জন করে মোট ১৮০ জন ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে। এই শর্তের কারণে গ্রামগঞ্জের বহু কলেজ আর এমপিওভুক্ত হতে পারবে না।
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় জানান, শিক্ষার্থী ও পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হারের শর্তের বেড়াজালে বহু প্রতিষ্ঠান আবেদন করেও এমপিওভুক্ত হতে পারবে না।
জানা গেছে, নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ-অষ্টম) বিদ্যালয় এমপিওভুক্তি পেতে শহর ও মফস্বলের নূ্যনতম ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে যথাক্রমে ১২০ জন ও ৯০ জন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ষষ্ঠ-দশম) ক্ষেত্রে শহর ও মফস্বলে এ সংখ্যা যথাক্রমে ২০০ জন ও ১৫০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ) তা ৪২০ জন ও ৩২০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে (একাদশ ও দ্বাদশ নূ্যনতম ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে শহরে ১৮০ জন, মফস্বলে ১৪০ জন। স্নাতক (পাস) কলেজে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৪৯০ জন ও ৪২৫ জন (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখাসহ)।
একইভাবে এমপিওভুক্তি পেতে পাসের হারের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হার নির্ধারণ করা হয়েছে এবার। জেএসসিতে শহর, জেলা সদর/পৌরসভা এবং মফস্বল এই তিন ক্যাটাগরিতে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাসের নূ্যনতম হার হতে হবে যথাক্রমে ৭০, ৬৫ ও ৬০ শতাংশ। এসএসসিতে তা ৭০, ৬০ ও ৫৫ শতাংশ। এইচএসসিতে শহরে ৬৫, জেলা সদর ও পৌরসভায় ৫৫ ও মফস্বলে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে পাস করতে হবে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :