ঢাকা : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও এখনই বন্ধ হচ্ছে না দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরেই চলতে থাকবে। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি ঘন ঘন পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রোববার (৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বৈঠকের বিষয়ে জানাতে সোমবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সূত্র জানায়, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি হয়নি। যদি প্রয়োজন হয় পরে জরুরি বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে বৈঠকের পর রাতে পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেছেন, বৈঠকে সব তথ্য-উপাত্ত ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত যেভাবে সীমিত আকারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলছে, সেভাবেই চলবে। তবে খুব ঘন ঘন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে ও পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে শনিবার করোনা সংক্রমণ বাড়ার সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না। টিকা নিয়ে যেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসে—সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
এদিকে গতকাল এক আদেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির এই পরিস্থিতিতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় চলমান শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দিতে অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের শনিবার (৮ জানুয়ারি) সই করা অফিস আদেশ রবিবার (৯ জানুয়ারি) জারি করা হয়।
অফিস আদেশ জানানো হয়, ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থীকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ভ্যাকসিন দিতে ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের গত ৩০ ডিসেম্বর বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে। রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে নির্দেশনাগুলো দেওয়া হলো।
১. ১২-১৮ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থী (নিবন্ধনকৃত ও অনিবন্ধনকৃত) ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে।
২. সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনে শিক্ষার্থীদের টিকা কেন্দ্রে উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন। একইসঙ্গে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষককেও টিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করবেন।
৩. টিকা গ্রহণ ছাড়া কোনও শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
৪. টিকা কার্যক্রম চলমান অবস্থায় সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা/খানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সব কর্মকর্তা কর্মচারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।
৫. জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিশ্চিতে সচেষ্ট থাকবেন।
করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। তবে সব দিন সব শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে না। সীমিত পরিসরে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :