ঢাকা : আগামী বছর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার। তবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য এ বছরই তা চালু করা যায় কিনা তা ভেবে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির ‘জাতীয় সম্মেলন ও পলিটেকনিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেন, ২০২৩ সাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করবে সরকার। তবে তার আগেই ছুটি দুইদিন করা যায় কিনা তা ভেবে দেখা হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
কারিগরি শিক্ষার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কারিগরি দক্ষতা অর্জনকে আমরা বিরাট গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা দক্ষ হয়ে গড়ে উঠেছে কিনা সেটি নিশ্চিত করতে চাই। শিক্ষার্থীদের মানবিক, সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য যেসব দিকে নজর দেওয়া দরকার, শেখ হাসিনা সরকার সেদিকে নজর দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, মাঝখানে প্রায় ১০ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি বন্ধ ছিল। অতীতের সরকার ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা অন্য উপায়ে প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত করেছে। কিন্তু, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বচ্ছ উপায়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে ভাবছে সরকার। এর আগে, ৫০টি প্রতিষ্ঠানকে ৭০ কোটি দেওয়া হয়েছে ল্যাব ও আনুষঙ্গিক কাজের জন্য। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান সে অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারেনি। কাজেই বরাদ্দ দিলেই শুধু হবে না, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনে সেটি কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, সক্ষমতা হিসেব না করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির একটা প্রবণতা আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয়। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, সকল পর্যায়ে এ প্রবণতা আছে। ঢাকা শহরের সবচেয়ে নবীন প্রতিষ্ঠানে ৬৬ জন করে প্রতি ক্লাসে শিক্ষার্থী আছে, তারা সেটি ৭৫ জনে উন্নীত করতে চায়। আমি বলেছি ৬৬ থেকেও কমাতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আমরা যে ধরনের উন্নয়ন চাই, যে ধরণের উন্নয়নের কথা বলছি, সেটি এভাবে হবে না। আমরা মান বাড়ানোর চেষ্টা করব। এটি ঠিক রাখতে হলে সংখ্যা বাড়ানোর প্রবণতা রোধ করতে হবে।
দীপু মনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ মানব শক্তি উৎপাদনের জন্য শিক্ষার্থীদের তৈরি করে তুলতে হবে। যেই দেশ যত উন্নত হয়েছে সেই দেশে কারিগরি শিক্ষার হার, এনরোলমেন্ট অনেক বেশি। কিন্তু, আমাদের দেশে উলটো- কম মেধা সম্পন্ন, কম অবস্থাপন্ন শিক্ষার্থীদের কারিগরি পড়ানো হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কোর্স এফ্রিডিটেশন বিশেষজ্ঞ ড. শাহ আলম মজুমদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. ওমর ফারুক।
বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির (বাপশিস) (কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ) সভাপতি মো. আমান উল্লাহ খান ইউছুফজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাপশিস’র সাধারণ সম্পাদক জি. এম. আকতার হোসেন, ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট’র অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কাজী জাকির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন বাপশিস’র বিভিন্ন সদস্য ও শিক্ষকরা।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :