• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার সুযোগ নেই : শিক্ষামন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৩০, ২০২৩, ০১:১৫ পিএম
প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার সুযোগ নেই :  শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা : সারাদেশে চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

দেশের বড় এই পাবলিক পরীক্ষা শুরুর দিন রোববার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর বাড্ডা হাই স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের সুযোগ নেই। গুজব রটাতে পারে। সেই গুজব রটানো ধরা পড়লে কঠোর শাস্তি হবে।

এ ধরনের গুজব রটনা ঠেকাতে সার্বক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যেখানেই কোনো ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে, কেউ গুজব ছড়াবার চেষ্টা করছে বা কিছু, সেখানেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

প্রশ্ন বিতরণে ভুলভ্রান্তি হলে তা ‘ভুল’ হিসেবেই দেখা হবে বলে সতর্ক করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “গতবার যেসব জায়গায় ভুলভ্রান্তি হয়ছে, তাদের কড়া মাশুল দিতে হয়েছে। অতএব আশা করি পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকসহ যারা দায়িত্বে থাকেন, তারা ভুল যাতে না হয়, সে বিষয়ে সচেতন থাকবেন।"

দেশ ও দেশের বাইরে ৩ হাজার ৮১৮ কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয়েছে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। ১১টি শিক্ষাবোর্ডের ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী এবার এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

নয় বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র; এসএসসি ভোকেশনালে বাংলা-২ এবং মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে কুরআন মজিদ ও তাজভিদ বিষয়ের পরীক্ষা হচ্ছে প্রথম দিন।

নির্দেশনা ছিল, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগেই ঢুকতে হবে কেন্দ্রে, তাই সকাল ৯টা থেকেই শুরু হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে ঢোকার প্রস্তুতি। সিট প্ল্যান দেখে নিজ নিজ আসনে বসে যায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে আসেন অভিভাবকেরাও। তাই কেন্দ্রগুলোর সামনে ছিল অভিভাবকদের উপচে পড়া ভিড়।

বাড্ডা হাই স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন করে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, দেখলাম বাচ্চারা সব সময়মতো এসেছে। পরীক্ষার কক্ষের ভেতর তাদের বসার যে ব্যবস্থা সেটাও ভালো আছে। বাচ্চাদের মধ্যে একটা স্বতঃস্ফূর্ততাও দেখলাম।

এই কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ে প্রবেশ করেছে। নিজ নিজ কক্ষে বসে পরীক্ষা শুরুর আগে যা যা পূরণ করতে হয়, তা করছে। সবকিছুই ভালোমতো চলছে।

সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে দীপু মনি বলেন, শিক্ষকরা আছেন। প্রশ্নের কোড এল সময়মতো। যা যা পদ্ধতি অনুসরণ করার তা ঠিকমতো অনুসরণ করা হয়েছে।

মহামারীর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হত ফেব্রুয়ারিতে। মাঝে কয়েক বছর সেই নিয়মে ছেদ পড়ে। ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এপ্রিলে নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল সরকার। ২০২৩ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে এবারের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্নফাঁসের সুযোগ নেই, গুজব রটালে কঠোর শাস্তি: দীপু মনি

সংশোধিত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, "সংশোধনী কিন্তু সারা বই জুড়ে নয়। কোনো কোনো বিশেষ বিশেষ বিষয় ছিল, আমরা বলেছি সেগুলো পরে পড়াতে। এবার যেহেতু পরীক্ষা নেওয়ার পদ্ধতিটা ভিন্ন, কাজেই কোনো অসুবিধা হয়নি, হবেও না আশা করি।"

আগামী বছর পরীক্ষার সময় এগোবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমরা আগামী বছর পরীক্ষা এগিয়ে আনার চেষ্টা করব। তবে যারা পরীক্ষা দেবে তারা পুরো প্রস্তুতির সময় পেয়েছে কিনা তা দেখা হবে। এই বিষয়ে সারাদেশের শিক্ষকদের একটি মতামত নেওয়া হবে। তারা কোন সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করতে পারবে। শুধু তো তাড়াহুড়া করে শেষ করলে হবে না। স্বস্তিতে শেষ করতে হবে। শিক্ষকদের মতামত নিয়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "গত বছর আমরা পরীক্ষাটা এগিয়ে আনতে পারতাম। কিন্তু বন্যার কারণে আমাদের পেছাতে হল। এইবার আমরা গত বছরের থেকে অনেক এগিয়ে নিয়ে এসেছি। সামনের বছর চেষ্টা করব স্বাভাবিকের যত কাছাকাছি যাওয়া যায়।"

শিক্ষা বোর্ডগুলো ছয় মাস আগে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড দিলেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শেষ মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন কার্ড দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, "কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমন করে সেটি আমাদের জানাবেন। তাহলে আমরা সেই স্কুলের বিরুদ্ধে কঠোর হব।

“কোনো ক্ষেত্রে মনে হয়, শিক্ষার্থীদের বেতন বকেয়া থাকে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বেতন উদ্ধারের প্রক্রিয়া হিসেবে এটি ব্যবহার করে, যা মোটেও ঠিক নয়। গত বছর এমন একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। এবার এমন কেউ করলে, আমাদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।”

দীপু মনি বলেন, "পরীক্ষার্থীদের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করানো উচিত না। এমন সমস্যায় পড়লে তাদের বা অভিভাবকদের ৫-১০ দিন আগে বোর্ডে যোগাযোগ করা উচিত৷ অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা সচেতন হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।"

অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "শিক্ষার্থীরা যাতে মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করে, সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে তাদের পড়াশুনার জন্য মানসিক চাপ দেওয়া যাবে না। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পড়াশুনা যেমন জরুরি, এটাও জরুরি।"

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!