চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ভাঙচুরের ঘটনার মামলায় নিরপরাধ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অব্যাহতি দিতে প্রশাসনকে দুদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ।
গেল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের শিক্ষক ক্লাব, উপাচার্যের বাসভবন, পরিবহন দপ্তর ও পুলিশ বক্স ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার থানায় দুটি মামলা করে চবি প্রশাসন। দুটি মামলায় সাতজন করে ১৪ জনকে চিহ্নিত করে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জন ছাত্রলীগের কর্মী ও দুজন সাধারণ শিক্ষার্থী রয়েছেন ।
ভাঙচুরের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। ছাত্রলীগের মতে, প্রশাসনের দায়ের করা মামলায় অনেক নিরপরাধ ও সাধারণ শিক্ষার্থীকে ফাঁসানো হয়েছে। তাছাড়া প্রশাসন তড়িঘড়ি করে মামলা দুটি করেছে।
এক্ষেত্রে প্রকৃত ঘটনার সাথে কারা জড়িত সেটা নিয়ে কোন তদন্ত করা হয়নি। এতে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন অনেক শিক্ষার্থীকে মামলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাই নিরপরাধ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে প্রশাসনকে দুই দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, মামলায় অনেক নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে ফাঁসানো হয়েছে। এই মামলাকে কেন্দ্র করে কোন একটা সংগঠনের বিরুদ্ধে অপবাদ আসবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দুদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার অবস্থান পরিবর্তন করে নিরপরাধ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মামলা থেকে অব্যাহতি না দিলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, প্রশাসন যদি আগামী দিনের মধ্যে অবস্থান পরিষ্কার না করে এবং নিরপরাধ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অব্যাহতি না দেয় তাহলে আমরা সাংগঠনিকভাবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলায় অসংগতি রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মামলার প্রধান আসামি থেকে শুরু করে এজহার ভুক্ত অনেক আসামিকে নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তারা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়।
ভাঙচুরের ঘটনার সাথে জড়িত নয় এমন কাউকে হয়রানি করা হবে না জানিয়ে চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন ফুটেজ ও ভিডিও দেখে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। কোন নিরপরাধ ও সাধারণ শিক্ষার্থীকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হবে না।
প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে যাওয়ার সময় হেলে পড়া গাছের সাথে ধাক্কা লেগে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়। দুর্ঘটনার জেরে ক্যাম্পাসের শিক্ষক ক্লাব, উপাচার্যের বাসভবন, পরিবহন দপ্তর ও পুলিশ বক্সে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে প্রশাসন থানায় দুটি মামলা করে। যার মধ্যে ১২ জন ছাত্রলীগ কর্মী এবং দুজন সাধারণ শিক্ষার্থী রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ এবং প্রদান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা দুটি করে।
এমটিআই