• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

‘শরীফার গল্প’ নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলে পরিবর্তন করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৩, ২০২৪, ০৯:০৬ পিএম
‘শরীফার গল্প’ নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলে পরিবর্তন করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা: শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠীর পাঠ অংশের উপস্থাপনায় কোনো বিভ্রান্তি বা বিতর্ক থাকলে তা পরিবর্তন করা হবে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।

সমকামিতাকে উসকে দেওয়ার অভিযোগে ঢাকায় একজন শিক্ষকের দোকানে দোকানে গিয়ে পাঠ্যবইয়ের ওই দুই পাতা ছেঁড়া নিয়ে ভিডিও ছড়িয়ে পড়া ও বিতর্কের মধ্যে মন্ত্রীর এ বক্তব্য এল।

সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “গল্পটি উপস্থাপনার ক্ষেত্রে যদি এমনভাবে উপস্থাপন হয়ে থাকে যে, যেখানে এই ধরনের বিভ্রান্তি এবং বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস থেকে থাকে, তাহলে এ গল্পের উপস্থাপন পদ্ধতি পরিবর্তন করা যায় কি না এই বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করব।

“মূল লক্ষ্য একটি জনগোষ্ঠীর প্রতি সহমর্মিতা, তাদের যে নাগরিক অধিকার রয়েছে, তাদের প্রতি সম্মান রেখে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে যদি ভিন্ন কোনো সুযোগ থেকে থাকে, সেখানে বিশেষজ্ঞরা মতামত দেবেন। এটা যেহেতু বিশেষায়িত বিষয়। আমরা পলিসি লেভেল মন্ত্রী সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।”

এ সময় নওফেল বলেন, ধর্মের বিষয়ে একটি গোষ্ঠী সবসময় এমন বিরোধিতা করে।

“আমাদের দেশে একটি গোষ্ঠী নানান বিষয়ে ধর্মকে ব্যবহার করে হোক বা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার করে হোক, নানান সময়ে অরাজকতা করা বা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার একটি প্রবণতা তাদের মধ্যে আছে। গতবছরও সেটা ছিল। একটি সংগঠন থেকে কিছুদিন আগে আমার কাছে কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল, কওমি মাদ্রাসার কিছু শিক্ষকগণ এসেছিলেন।”

তিনি বলেন, “সেখানে তারা দাবি করেছেন, এখানে ট্রান্সজেন্ডার শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। বিভ্রান্তি সৃষ্টির বিষয়টি তারা আমাদের নজরে এনেছিলেন। তবে আমরা যখন আলোচনা করেছি তখন দেখেছি শব্দটা ট্রান্সজেন্ডার নয়, শব্দটা থার্ড জেন্ডার অর্থাৎ তৃতীয় লিঙ্গ। এটা আইনত স্বীকৃত যে, তারা তৃতীয় লিঙ্গ সমাজে হিজড়া নামে পরিচিত তারা। তারা আমাদের দেশের নাগরিক। তাদের নাগরিক অধিকার রয়েছে।”

শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন সহজ নয় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “নতুন পাঠ্যক্রম এখনও এক মাস হয়নি। এখনই সমালোচনার মানে হচ্ছে বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা। পাঠ্যবইয়ে যদি পরিবর্তন প্রয়োজন হয়, সেটা আলোচনা করে ঠিক করা হবে।”

‘শরীফার গল্প’ নামে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ে হিজড়া ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক একটি পাঠ অংশ রয়েছে। সেখানে হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডাদের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

গত শুক্রবার রাজধানীতে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে এক আলোচনায় পাঠ্যবইয়ের এ অংশের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। তার দাবি, 'শরীফার গল্পে' সমকামিতাকে উসকে দেওয়া হচ্ছে।

পরে বিভিন্ন দোকানে গিয়ে এ বই কিনে সেটির ওই দুই পাতা ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। পরে বইটি আবার দোকানিকে ফেরত দেন। এই ভিডিও ফেইসবুকে ছড়ালে তা বিতর্ক তৈরি করে।

বইয়ের পাতা ছেঁড়ায় এ শিক্ষকের চাকরি হারানোর আলোচনার মধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আসিফ মাহতাবের আর চাকরির চুক্তিতে নেই। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।

সচিবালয়ে এ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা একটি ভিডিও দেখেছি। এনসিটিবিতে যারা সহকর্মীরা আছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।

এআর

Wordbridge School
Link copied!