ঢাকা: ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে।তবে দেশের ছয়টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মেডিকেল কলেজের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত হওয়া মেডিকেল কলেজগুলো হলো- উত্তরা আইচি মেডিকেল কলেজ, নর্দান মেডিকেল (ঢাকা), নর্দান মেডিকেল (রাজশাহী), শাহ মাখদুম মেডিকেল কলেজ (ঢাকা), কেয়ার মেডিকেল কলেজ এবং সাভারের নাইটেঙ্গেল মেডিকেল কলেজ। এর মধ্যে কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও সাভারের নাইটেঙ্গেল মেডিকেল কলেজের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এসব মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী ভর্তি করার জন্য উপযুক্ত না। বেসরকারি মেডিকেল কলেজের আইন রয়েছে। অতীতে আইনের ব্যত্যয় ঘটতে পারে। তবে এখন থেকে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এক ঘণ্টাব্যাপী দেশের ১৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রের ৪৪টি ভেন্যুতে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে যার মোট আসন ৫৩৮০ টি। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ৬৭টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে যার মোট আসন ৬ হাজার ২৯৫টি।
প্রশ্নফাঁস বন্ধে ডিজিটালাইজেশন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এমবিবিএস ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনয়ন, প্রকৃত শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও অনিয়ম বন্ধ এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছর অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং ডিজিটালাইজেশনের ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হয়েছে এবং একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থী ও দায়িত্বরতদের জন্য নির্দেশনা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ভর্তি পরীক্ষার দিন সকাল ৮টায় হলের গেট খুলবে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার পর কোনো পরীক্ষার্থী হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট কপি নিয়ে আসবেন।
কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের (ছেলে ও মেয়ে) পৃথক পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র ও বল পয়েন্ট কলম ছাড়া অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি আর্চওয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের বিষয়টি তদারকি করা হবে।
ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে ইনভিজিলেটরগণ (কক্ষ পরিদর্শক) সকাল ৮টা থেকে পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষে অবস্থান করে প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থীর ছবির জলছাপ ও রঙিন ছবির সঙ্গে পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
পরীক্ষার্থী, ইনভিজিলেটর ও ভেন্যুর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ কোনোভাবেই মোবাইল, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্লুটুথ, এয়ারফোন, ইত্যাদি বহন করবেন না। ভর্তি পরীক্ষার হলে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িত কেউ মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র বা ভেন্যুতে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারবে না।
ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ১০ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের সেন্টারসমূহ বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন কোচিং বন্ধ ও সাইবার অপরাধ রোধকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
পরীক্ষার দিন কেন্দ্রসমূহের আশপাশের ফটোকপি মেশিন বন্ধ থাকবে। পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রকার অসদাচরণ/প্রতারণা/গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :