ঢাকা : সব ধরনের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে দ্বিতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় বদলির ক্ষেত্রে সাতটি শর্তারোপ করার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
কর্মশালা সূত্রে জানা গেছে, বদলির ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বদলির সুযোগ পাবেন না। অধিক সংখ্যক প্রার্থীর বদলির বিষয়টি বিবেচনা করা কঠিন হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বদলির শর্তাবলীর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর তিনি বদলির আবেদন করতে পারবেন। এর আগে কেউ আবেদন করলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। চাকরিজীবনে কেবল একবারই বদলি হওয়ার সুযোগ থাকবে।
বদলির কারণে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শূন্যতা তৈরি করা যাবে না। শিক্ষকের পদ শূন্য না থাকলে বদলির সুযোগ দেওয়া হবে না। এমনকি আবেদনই বিবেচনায় নেওয়া হবে না। পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রে উভয়ের সম্মতিপত্র থাকতে হবে। দুইজনের সম্মতিপত্র জমা দেওয়ার পর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে একজনের সম্মতিপত্রের ভিত্তিতে পারস্পরিক বদলি দেওয়া হবে না।
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই পদে একাধিক ব্যক্তি বদলির আবেদন করলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক প্রদত্ত মেধাতালিকা বিবেচনায় নেওয়া হবে। মেধাতালিকায় যে এগিয়ে থাকবে তাকেই বদলির সুযোগ দেওয়া হবে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি সফটওয়্যারের মাধ্যমে হবে। তবে এজন্য নতুন করে সফটওয়্যার তৈরি করা হবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলির জন্য যে সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে সেটি আপডেট করা হবে। এরপর ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা বদলি হবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি)। আর মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বদলির বিষয়টি দেখবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। বদলির আবেদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা ম্যানেজিং কমিটির কোনো অনুমতি নিতে হবে না। শিক্ষকরা সরাসরি অনলাইনে আবেদনের সুযোগ পাবেন।
বদলির আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ১৬ অক্টোবর থেকে। যা চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বদলির কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য নতুন করে এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
কর্মশালা সূত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হবে। বিশেষ করে নারী শিক্ষকদের বদলির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। বদলির ক্ষেত্রে কর্মরত শিক্ষকের নিজ জেলার ঠিকানা, নারী শিক্ষকদের স্বামীর কর্মস্থল, স্বামীর স্থায়ী ঠিকানার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
বর্তমানে কর্মরত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষকদের নিজ জেলার দূরত্বও বদলির ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হবে। এছাড়া বদলির ক্ষেত্রে শিক্ষক নিবন্ধনের ব্যাচ বিবেচনায় নেওয়া হবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কর্মশালায় উপস্থিত শিক্ষা প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, একজন শিক্ষককে বদলির আবেদন করার ক্ষেত্রে বর্তমান কর্মস্থলে অন্তত দুইবছর ইনডেক্সধারী হিসেবে চাকরি করতে হবে। এরপর তিনি বদলির সুযোগ পাবেন। চাকরিজীবনে কেবল একবারই বদলির সুযোগ দেওয়া হবে। এই বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বদলির জন্য বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা বদলির সুযোগ পাবেন না। অধিক সংখ্যক প্রার্থীর বদলির বিষয়টি দেখভাল করা কঠিন হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কর্মশালায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা বলেন, এনটিআরসিএ প্রথম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ২০১৫ সালে। এ নিয়োগ সম্পন্ন হয় ২০১৬ সালের দিকে। প্রথম গণবিজ্ঞপ্তির আগে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা নিজে প্রতিষ্ঠান পছন্দের সুযোগ পেয়েছেন। ফলে তাদের বদলির প্রয়োজন নেই। তাই এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরাই বদলির সুযোগ পাবেন।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :