ঢাকা : জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি এখন কারাগারের বাসিন্দা। আদালতের নির্দেশে শুক্রবার (১৩ আগস্ট) তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে করোনাজনিত কারণে তাকে এখন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এদিকে প্রথম দিকে পরীমণির পক্ষে কেউ কথা না বললেও সম্প্রতি তার সমর্থনে মুখ খুলছেন তারকারা। এবার চিত্রনায়িকা পরীমনির বিষয়ে মুখ খুললেন ঢাকাই সিনেমার কিং খান খ্যাত অভিনেতা শাকিব খান।
শনিবার (১৪ আগস্ট) সকালে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একজন সহকর্মী হিসেবে যতটা জেনেছি, পরীমনি বাবা-মা হীন একটি মেয়ে। তার বেড়ে ওঠার সঙ্গে আর দশটা তরুণ-তরুণীর বেড়ে ওঠার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। তার স্ট্রাগল এবং আর দশটা মানুষের স্ট্রাগল এক হবে না। হয়তো অভিভাবকের অভাবেই অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্তটা নিতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১০ আগস্ট আদালত চত্বরে পরীমনির শতবর্ষী নানা তার নাতনিকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন। করোনার ভয়াবহতাও তাকে আটকাতে পারেনি। রক্তকে উপেক্ষা করতে পারেনি রক্ত। কিন্তু সময় কি নিষ্ঠুর। নাতনীর সঙ্গে দেখাই হলো না তার নানার। আদালত চত্বরেই তার নানাকে বলতে শুনেছি, “নিজের জন্য জীবনে কিছুই করেনি পরীমনি। সব মানুষের জন্য দান করে গেছে। আর এখন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।”‘
‘বিষয়টা এখন বিচারাধীন, ওই বিষয়ে কিছু বলছি না। তিনি যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেছেন, তার কী অপরাধ সেটা বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। দেশের প্রচলিত আইন-আদালতে যা আছে, নিশ্চয়ই নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে সঠিক বিচার হবে। শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর তার প্রতি কোনো ধরণের সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে, দুঃসময়ে শিল্পীর পাশে না থেকে, উল্টো তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
কোনো কিছু না ভেবে পরীমনির সদস্যপদ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। এটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো। সমিতির এই আচরণ ব্যক্তিগতভাবে আমাকে হতবাক ও বিস্মিত করেছে। আমি মনে করি, সহশিল্পীর সঙ্গে সংগঠনের এটি একটি অমানবিক আচরণ। প্রশ্ন থেকে যায়, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তাহলে কাদের স্বার্থে?’ যোগ করেন শাকিব খান।
শাকিব খান বলেন, ‘যারা পরীমনিকে বিপথে নিয়ে গেছে, তাদেরকেও খুঁজে বের করা উচিত। ৩০টির বেশি সিনেমার সঙ্গে তিনি জড়িত বলে জানতে পেরেছি। তার হাতে আছে আরও বেশ কিছু সিনেমা। কিন্তু যারা বছরের পর বছর একটি সিনেমাতেও কাজ না করে দিনের পর দিন শিল্পী সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, তাদেরও আয়ের উৎস খুঁজে বের করা উচিত।’
‘সহশিল্পী হিসেবে আশা রাখি, পরীমনির ক্ষেত্রে আইন তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। পরীমনি যখন ফিরবে, তার ভুল থেকে শিক্ষাও নেবে। যে শিক্ষা তার আগামী জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট বিকেল ৪ টার দিকে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এসময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মদ, মদের বোতলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয় এবং তাকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় র্যাব তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে।
গত ৪ আগস্ট গ্রেফতারের পর এতদিন তিনি সিআইডি হেফাজতে ছিলেন। দুই ধাপে ৬ দিন রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছিল তাকে। এরপর শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তার আইনজীবী জামিন চাইলেও আদালত সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :